খালেদা জিয়াকে নিয়ে বারবার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় নেই: ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বারবার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় নেই। কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়া আদলতে গিয়েছেন, আদালতই সিদ্ধান্ত দেবেন।

আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের এক যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের অনেক কাজ রয়েছে, দেশের কাজ, দলের কাজ। একজন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বারবার আমরা প্রশ্নের জবাব দেব, সেই সময় আমাদের নেই।’

খালেদার জামিন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়া আদালতে গেছেন। আদালতই সব ঠিক করবেন। এটা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয়, এটা দুর্নীতির মামলা। আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত। এটা আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা বা আমাদের কারও এখতিয়ারে নেই। কাজেই বারবার এটা প্রশ্ন করে বিব্রত করবেন না। আমি বারবার এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না।’

করোনাভাইরাসে দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে কোনো কারণে মন্দা দেখা দিলে তার প্রভাব সারা বিশ্বেই থাকে। তবে কাদের জানান, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতো অবস্থা এখনো আসেনি। তবে এই ভাইরাসের প্রভাব বেশি দিন থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বলেও তিনি জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হলে পদ্মা সেতুর কাজে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। করোনাভাইরাসের প্রভাবের পরেও তিনটি স্প্যান বসেছে। আগামীকালও একটি স্প্যান বসার কথা। মন্ত্রী বলেন, যারা ছুটিতে চীনে আছেন, তাঁরা আগামী আড়াই মাসের মধ্যে ফিরে না এলে একটু সমস্যা হতে পারে। তবে আগামী দুই মাস কাজের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না বলেও জানান।

ঢাকার সিটি করপোরেশন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারচুপিমুক্ত নির্বাচন হয়েছে। ইভিএমে কারচুপি বা জালিয়াতির কোনো সুযোগ ছিল না। কারচুপি হলে নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি আরও বেশি দেখা যেত। ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারণ বিষয়ে বলেন, পরিবহন সংকট ও তিন দিন অফিস ছুটি থাকায় ভোটার কম ছিল। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার যে অপচেষ্টা ছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে দেশে–বিদেশে বা বন্ধু রাষ্ট্র থেকে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসেনি, এটা এ নির্বাচনের সাফল্য।

সামনের উপনির্বাচন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের নেতাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভোটার উপস্থিতি যেন বেশি হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ভোটার উপস্থিতির কম হওয়ার পেছনে সাংগঠনিক দুর্বলতাও ছিল বলে উল্লেখ করে সাংগঠনিক দুর্বলতা দলের কোনো ক্ষতি কারণ হচ্ছে কি না, তা দেখার আহ্বান জানান।

দলের নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্মেলন ছাড়া দলের কোনো কমিটি করা যাবে না। কেন্দ্রের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া কোনো কমিটি ভাঙা যাবে না। কমিটি ভাঙতে হলে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করবেন। কেন্দ্র ছাড়া কাউকে সরাসরি বহিষ্কার করা যাবে না বলেও নির্দেশ দেন। দল ভারী করার জন্য বিতর্কিত ব্যক্তিদের না আনার জন্য বলেন। এ ছাড়া ঘরে বসে কমিটি না করারও নির্দেশ দেন। ওবায়দুল কাদের জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন এপ্রিল থেকে শুরু হবে।

যৌথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, আব্দুর রহমান, মো. শাজাহান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।