৫০ বছর পর নিজস্ব শহীদ মিনার, আজ প্রথম শ্রদ্ধা

প্রায় তিন একর জায়গাজুড়ে বিদ্যালয়। বড় পরিসরের প্রাঙ্গণ। সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি ছিল শিক্ষার্থীদের। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর থেকে ধারাবাহিক এ দাবি উঠছিল। অবশেষে ৫০ বছর পর নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মিনারটির উদ্বোধন হয়। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিয়ে প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে সেখানে।

শহীদ মিনারটি নির্মিত হয়েছে সিলেট নগরীর সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চবিদ্যালয়ে। গতকাল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে দেখা যায় উৎসবমুখর এক পরিবেশ। এতে শিক্ষক–শিক্ষার্থী—সবাই আনন্দিত। বিকেলে শহীদ মিনার উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতায় এলাকাবাসীও একাত্ম হন।

বিদ্যালয় সূত্র জানায়, প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একমাত্র প্রতিষ্ঠান সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চবিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৯ সালে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষার্থীরা যখন এসএসসি পরীক্ষা দেন, তখন দাবি ওঠে শহীদ মিনার নির্মাণের। বড় আঙিনার এক কোণে শহীদ মিনার স্থাপনের স্থান নির্ধারণ করে শিক্ষার্থীরা এ দাবিতে সোচ্চার ছিল, কিন্তু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় সরকারি কোনো সহায়তা মিলছিল না। শহীদ মিনার নির্মাণের দাবিটিও পূরণ হচ্ছিল না। প্রতিষ্ঠাকালীন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দাবি অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।

>দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনারটি গতকাল বিকেলে উদ্বোধন হয়। আজ ফুল দিয়ে প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে সেখানে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এলাইছ মিয়া বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব নেন। এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে উদ্যোগী হন। এলাকাবাসীর অর্থায়নে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাটি ভরাট করান। ব্যবসায়ী মিজান আজিজ চৌধুরীর অর্থসহায়তায় এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সামনে রেখে শহীদ মিনার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৫০ বছর অপেক্ষার পর নিজের করে শহীদ মিনার পেলাম আমরা।’

আজাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আছি। পাশাপাশি আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি। এ দায় থেকে শহীদ মিনার স্থাপনে উদ্যোগী হয়েছি। ৫০ বছর অপেক্ষার পর শহীদ মিনার হওয়ায় এলাকাবাসীও খুশি।’

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৬০০। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার্থী ২০০ জন। গতকাল উদ্বোধনের আগে বিদ্যালয় আঙিনায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী—সবাই অন্য রকম এক আনন্দ নিয়ে অপেক্ষা করছে আজ প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।