বিয়ের লাল শাড়ি পড়ে রইল, গায়ে উঠল কাফন

গত মাসে বিদ্যালয়ে নতুন বই উৎসবে এক শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিয়েছিলেন তাসলিমা। ছবি: সংগৃহীত
গত মাসে বিদ্যালয়ে নতুন বই উৎসবে এক শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিয়েছিলেন তাসলিমা। ছবি: সংগৃহীত

চার দিন পরই বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল স্কুল শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তারের (২৩)। বিয়ের ছুটি নিতে ও সহকর্মীদের দাওয়াত দিতে ভাইয়ের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন নিজ কর্মস্থলে। কিন্তু পথে কুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ছিটতে পড়েন তিনি। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চৌরাস্তা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তাসলিমা উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব চরলক্ষ্মী আশ্রায়ণ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর বাবার বাড়ি মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চর তোরাবআলী গ্রামে হলেও বাবার মৃত্যুর পর মা তাঁকে নিয়ে চরক্লার্ক ইউনিয়নের কেরামতপুর গ্রামে নানা বাড়িতে চলে যান।

তাসলিমার মামা মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগামী বুধবার বিয়ে ছিল। এ উপলক্ষে ছুটি নিতে এবং স্কুলে সহকর্মীদের দাওয়াত দিতে বিয়ের কার্ড নিয়ে সকালে তাঁর এক মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে স্কুলে যাচ্ছিল তাসলিমা। মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চৌরাস্তা এলাকায় গেলে একটি কুকুর মোটরসাইকেলের সামনে পড়ে। এ সময় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পাকা রাস্তায় পড়ে যায় তাসলিমা। তাঁর মাথা ফেটে গেলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বিয়ের লাল টুকটুকে শাড়ি পড়ার আগেই কাফনের সাদা কাপড় পরে তাঁকে চলে যেতে হয়েছে। তবে মোটরসাইকেলে থাকা ইব্রাহিম অক্ষত ছিলেন।

সুবর্ণচরের চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।