'ডিসি-এসপি চলেন আমাদের নিয়ন্ত্রণে'

‘ডিবি কন (বলেন), ওসি কন, এসপি কন, ডিসি কন—যেটাই কন, আমাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে। আমার মনে হয় গাইবান্ধা জেলাত মন্ত্রী, এমপি—যত কিছুই থাকুক না কেন, আমার চেয়ে বড় মাইকেল মনে হয় এই ডিস্ট্রিক্টে (জেলা) আর নাই।’

এমন কথা বলেছেন আশার আলো প্রভাতি সংস্থা নামের একটি বেসরকারি সংগঠনের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। গত শুক্রবার গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ডাকবাংলা বাজার চত্বরে কর্মিসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। এর ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। অবশ্য তিনি এ রকম কথা বলেননি বলে দাবি করেছেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে আশার আলো প্রভাতি সংস্থা ওই সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ওই সংস্থার চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। সভায় তিনি আরও বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ দেব, চেয়ারম্যান-মেম্বার নন, এমপি-মন্ত্রীও যদি আমার সাথে টিকে থাকতে পারেন তাঁর এলাকাতেই, তাহলে আমি এই সংস্থা থেকে বহিষ্কার হয়ে যাব। এই গাইবান্ধায় আমি আর কাজ করব না।’

শফিকুল আরও বলেন, ‘আমার মতো ৬৪টা ছেলে ৬৪টা ডিস্ট্রিক্টে যদি জন্ম নেয়, তাহলে মন্ত্রী লাগবে না, সরকার লাগবে না, এমপিকেও লাগবে না। এই ৬৪ জন দেশ চালাবে। আমাকে ধরতে গেলে অবশ্যই জেলার প্ল্যাটফর্ম পার হয়ে তারপর ধরতে হবে। আমাকে ধরতে গেলে ডেপুটি স্পিকারের অনুমতি নিয়ে ধরতে হবে। আর ডেপুটি স্পিকার ফুলছড়ি-সাঘাটা থানার এমপি। মাথার মধ্যে কথা মনে রাখবেন। একটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, একটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। আর গোটা গাইবান্ধা ডিস্ট্রিক্ট পরিচালনা করার মতো ক্ষমতা আমাকে সরকার দিছে। সরকারের সাথে যদি এত বড় আমাক লড়াই-যুদ্ধ করার লাগে, আমি তাই করতে বাধ্য হইছি। কারণ, সরকার আমাক ক্ষমতা দিছে। ক্ষমতাবলে আমি জনগণের সেবায় দোরগোড়ায় কাজ করি।’

সভায় দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল শনিবার আশার আলো প্রভাতি সংস্থার চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই সভায় আমি এ ধরনের বক্তব্য দিইনি। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকেরা ছিলেন। কে কখন কীভাবে ভিডিও করেছে বা ভিডিও বানিয়েছে, সেটা আমার জানা নেই। আর ডিসি, এসপিরা আমার নিয়ন্ত্রণে থাকবেন কেন? আমি তো সরকার নই।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছি। শফিকুল ইসলাম সত্যি এ রকম কথা বলে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’