আশা করব বিচার বিভাগ তাঁর স্বাধীনতা রক্ষা করবেন: ফখরুল

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি প্রসঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ছবি: আবদুস সালাম
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি প্রসঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ছবি: আবদুস সালাম

সরকারের মুজিব বর্ষ পালনের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যখন আটক, তখন উৎসব করে মুজিব বর্ষ পালন করা হচ্ছে।

আজ রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শ্রমিক দল আয়োজিত এক মানববন্ধনে ফখরুল এসব কথা বলেন।

আজ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আশা করব বিচার বিভাগ তাঁর স্বাধীনতা রক্ষা করবেন। সত্যিকার অর্থেই এই মামলায় যে রায় হওয়া উচিত , সেই রায় হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা অনেক উৎসব করে, অনেক ব্যয় করে মুজিব বর্ষ পালন করছেন। কখন করছেন? গণতন্ত্রের যিনি মাতা, তাঁকে কারাগারে আটক করে রেখে।’ তিনি মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়ার নানা ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মায়ের জন্য আমাদের এখানে দাঁড়াতে হয়। এ লজ্জা রাখার জায়গা নেই আমাদের। দেশনেত্রী শুধু একজন নেতা নন; তিনি এই বাংলাদেশের সত্যিকার অর্থেই গণতন্ত্রের মাতা।’

খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এমন একটা জাতি আমরা যে আমাদের যাঁরা শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাঁদের আমরা মূল্যায়ন করতে পারি না। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারি না।’

সংবিধান অনুয়ায়ী জামিন খালেদা জিয়ার প্রাপ্য হক ও অধিকার উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, হক ও অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই ধরনের মামলায় সবাই জামিনে আছেন। সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি জামিনে আছেন, কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিনের বেলায় তা দেওয়া হচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ আদালতে বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি বলেই বারবার যাই। আশা করি, ন্যায়বিচার পাব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এই ফ্যাসিস্ট সরকার আদালতকেও নিয়ন্ত্রণ করছে। খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ আদালতেই ন্যায়বিচার পাননি।’

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, শ্রমিকদের প্রকৃত আয় বাড়ছে না। ব্যবসায় বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গুম হয়ে যাঁরা ফিরে এসেছেন, তাঁরা কথা বলছেন না। এ ছাড়া এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ। গুম, হত্যা, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়।

মির্জা ফখরুল সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে মানুষের কথা শোনার জন্য বাধ্য করার আহ্বান জানান। এ ছাড়া সরকারকে পদত্যাগ করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান।

মানববন্ধনে শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার প্রমুখ।