বিএনপি ও জাপা প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল, একমাত্র বৈধ প্রার্থী আ.লীগের আমিরুল

বাগেরহাট-৪ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে একমাত্র বৈধ প্রার্থী হিসেবে আমিরুল আলমের নাম ঘোষণা করেন। ছবি: ইউএনবি
বাগেরহাট-৪ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে একমাত্র বৈধ প্রার্থী হিসেবে আমিরুল আলমের নাম ঘোষণা করেন। ছবি: ইউএনবি

বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থীর জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ঋণখেলাপি ও পৌর কর পরিশোধ না করায় ওই দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আমিরুল আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে তিনজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ রোববার ছিল মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাইয়ের দিন। বিকেলে বাগেরহাট জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যাচাই–বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা দেন।

তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আমিরুল আলম মিলনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ফলে এই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী রইল না।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী খায়রুজ্জামান শিপন ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী সাজন কুমার মিস্ত্রী।

বাগেরহাট-৪ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী সাজন কুমার মিস্ত্রীর ব্যাংকে ঋণ রয়েছে এবং বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী খায়রুজ্জামানের ব্যাংকঋণ ও পৌর কর বকেয়া রয়েছে। তাঁরা তাঁদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করায় তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আমিরুল আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে রিটানিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি প্রার্থী কাজী খায়রুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘পৌরসভার একটি হোল্ডিং ট্যাক্সের কারণে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে আপিল করব। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাব। যে বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়টি ধরা হয়েছে, তা আমার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত। সেখানে আমি থাকিও না। আর পৌর ওই ট্যাক্সের বিষয়ে কখনো কোনো নোটিশও করা হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাজন কুমার মিস্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। আর প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, প্রার্থিতা ফিরে পেতে তিনি আবেদন না–ও করতে পারেন।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা ২৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন বরাবর তাঁদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্দিষ্ট ফরমে আপিল করতে পারবেন। আপিল নিষ্পত্তি ২৮ ফেব্রুয়ারি। আর ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহার।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়ের পর একক প্রার্থী থাকলে তফসিল অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের দিন ১ মার্চ ওই প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা।

গত ১০ জানুয়ারি বাগেরহাট-৪ আসনের সাংসদ মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যু হলে আসনটি শূন্য হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৯ ফেব্রুয়ারি এই আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। আগামী ২১ মার্চ এই শূন্য আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।