নারায়ণগঞ্জে দগ্ধ দাদি ও বাবার পর ছেলেও না-ফেরার দেশে

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার ফতুল্লায় বন্ধ রান্নাঘরে চুলায় আগুন ধরাতেই জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম ইমন মিয়া (২২)। আজ সোমবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে এ ঘটনায় দগ্ধ তাঁর দাদি নুরজাহান বেগম ও বাবা কিরণ মিয়ার মৃত্যু হয়। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এই পরিবারের আরও পাঁচজন।


কিরণ মিয়ার ভায়রা মোস্তফা খান প্রথম আলোকে জানান, অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় এখন কিরণ মিয়ার ছোট ছেলে জোবায়ের (১০), কিরণ মিয়ার ছোট ভাই হিরণ মিয়া, তাঁর স্ত্রী মুক্তা আক্তার, মেয়ে ইলমা ও ভাগনে কাউসার মিয়া (১৬) গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে জোবায়ের, কাউসার ও হিরণ মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বেলা তিনটায় জানাজা শেষে ইমনের লাশ সদর উপজেলার ফতুল্লার সাহেবপাড়া এলাকায় কবরস্থানে দাদি নুরজাহান বেগম ও বাবা কিরণ মিয়ার কবরের পাশে দাফন করা হয়।

মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘আমরা লাশ দাফন করতে যাব। নাকি রোগীদের পাশে থাকব। আমরা দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। পুরো পরিবারটি তছনছ হয়ে গেছে। আমরা সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই। ওদের তো বেঁচে থাকার কেউ রইল না। দুটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা দিশেহারা।’

১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার সাহেবপাড়া এলাকায় পাঁচতলা ফ্ল্যাট বাড়ির নিচতলায় গ্যাসের চুলার আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয় একই পরিবারের ৮ জন। আগুনে ওই বাড়ির আসবাবসহ সব মালামাল পুড়ে যায়। প্রাণে বেঁচে যায় ১৩ মাস বয়সী ইকরা মনিসহ কিরণ মিয়ার স্ত্রী লিপি আক্তার। আশপাশের লোকজন দগ্ধ ৮ জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি করে।

দগ্ধ ব্যক্তিদের স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, ওই এলাকায় দিনের বেলায় গ্যাস থাকে না। গভীর রাতে গ্যাস আসে। এ কারণে অনেকে গ্যাস আসার অপেক্ষায় চুলার চাবি অন করে রাখেন। ওই দিন রাতে তাঁরা গ্যাসের চাবি অন করে রাখলে পুরো ঘরে গ্যাস জমে যায়। সকালে রান্না করার জন্য চুলা জ্বালাতে গেলে জমে থাকা গ্যাস থেকে আগুন লাগে। বাড়ির কর্তা কিরণ মিয়া গার্মেন্টস এক্সেসরিজ ব্যবসা করেন।