সান্ধ্য কোর্স নিয়ে তুমুল বিতর্ক, ভর্তি ৫ সপ্তাহের জন্য স্থগিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্সসহ অনিয়মিত সব কোর্সে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির সব ধরনের কার্যক্রম আগামী পাঁচ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। চলমান সান্ধ্য কোর্স থাকবে কি থাকবে না, থাকলে তার ধরন কী হবে—এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে প্রায় সাত ঘণ্টা তুমুল বাক্‌যুদ্ধের পর এ সিদ্ধান্ত আসে। এই সময়ের মধ্যে সান্ধ্য কোর্স পরিচালনার একটি সময়োপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদকে প্রধান করে ১৮ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাবে কি না এবং চলমান সান্ধ্য কোর্সের ধরনে পরিবর্তন আসবে কি না, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে গতকাল বেলা তিনটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এই সভা হয়।

সভায় প্রায় ছয় ঘণ্টা সান্ধ্য কোর্সের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় সান্ধ্য কোর্স পর্যালোচনা ও যৌক্তিকতা যাচাই কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে শিক্ষকেরা তর্কে জড়ান। সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল না। প্রথম দিকে বাইরের স্পিকারে সভার বক্তব্য শোনা গেলেও পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সান্ধ্য কোর্সের যৌক্তিকতা তুলে ধরে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের প্রোগ্রাম কিন্তু পরোক্ষভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে। কারণ, আমার বিভাগে যখন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান পড়েন, ন্যাশনাল কমিউনিকেশন সেক্টরের ডিরেক্টর পড়েন, সত্তরোর্ধ্ব একজন সিনিয়র ডিস্ট্রিক্ট জজ পড়েন, সত্তরোর্ধ্ব একজন রাজনীতিবিদ যখন পড়েন, তখন নিশ্চয়ই আমি গর্ববোধ করি।’

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক এবং সিনেট সদস্য আবুল মনসুর আহাম্মদ বলেন, ‘মাথায় সমস্যা হলে তার চিকিৎসা হতে পারে, মাথা কেটে ফেলার দরকার নেই।’

স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘সান্ধ্য কোর্সের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কান্না আমাদের শুনতে হবে। তাই নীতিমালার আওতায় সান্ধ্য কোর্স পরিচালনা করা উচিত।’

সান্ধ্য কোর্স পর্যালোচনা কমিটির প্রধান তোফায়েল আহমদ চৌধুরী তাঁদের প্রতিবেদন নিয়ে একাধিক শিক্ষকের সমালোচনার জবাব দিতে গেলে শিক্ষকদের একটি অংশ ‘শেইম শেইম’ বলে ওঠেন। পরে তিনি তাঁর ব্যাখ্যা দেন।