সাংসদের ফোনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ স্থগিত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাঁকড়ি নদের তীরে ৬৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দিনক্ষণ নির্ধারণ ছিল আজ মঙ্গলবার। কিন্তু কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাংসদ ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল হক এ উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুমিল্লার প্রকৌশলীদের ফোন করেছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আজ উচ্ছেদ অভিযান হচ্ছে না।

গতকাল সোমবার বিকেলে মুঠোফোনে জানতে চাইলে পাউবোর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাঁকড়ি নদের অলিপুর গ্রামে ১১ জন ও যাত্রাপুর এলাকায় ৫৭ জনসহ মোট ৬৮ জন অবৈধ দখলদার সরকারি জমির ওপর দোকান নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন। তাঁদের সরকারি জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য কয়েক দফা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এতে অবৈধ দখলদারেরা কর্ণপাত করেননি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১২ জানুয়ারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে আবেদন করে পাউবো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োজিত করেন। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে সাংসদ ও সাবেক রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোন করে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ করেন। 

জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল লতিফ বলেন, ‘সরকার নদী দখলদারদের নামের তালিকা তৈরি করে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৬৮ জন দখলদারকে উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হয়। আমাদেরও প্রস্তুতি ছিল। এরই মধ্যে ওই এলাকার সাংসদ উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে আপত্তি করেছেন। তিনি উচ্ছেদ কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তাঁর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হলো। সাংসদের ফোনের বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।’

>আজ মঙ্গলবার কাঁকড়ি নদের তীরে ৬৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানোর কথা ছিল।

জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘সাংসদ উচ্ছেদ অভিযান করতে না করে দিয়েছেন। এ সম্পর্কিত একটি চিঠি পাউবো আমাকে দিয়েছে। আমি সেটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এর বাইরে আমার কী করার আছে!’ 

জানতে চাইলে সাংসদ মো. মুজিবুল হক বলেন, ‘কাঁকড়ি নদের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের যেসব দোকানপাট নদীর বাইরের পাড়ে আছে, সেগুলোর উচ্ছেদ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করার জন্য পাউবোকে অনুরোধ করেছি। পুরো উপজেলার নয়।’