ছাত্রীর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে শিক্ষকের অশোভন মন্তব্যের অভিযোগ

শরীয়তপুরে একটি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রীর ছবি মুঠোফোনে তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে এক শিক্ষক অশোভন মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা গত রোববার শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আতঙ্কে ওই ছাত্রী ও তার বোন মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

ছাত্রীর পরিবার ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসাটির শিক্ষক নবম শ্রেণির ছাত্রীকে কক্ষে ডেকে মুঠোফোনে ছবি তোলেন। পরের দিন ওই ছবির মধ্যে ‘আই লাভ’ লিখে সেটি তাঁর ফেসবুকে আপলোড করা হয়। ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। বিষয়টি মাদ্রাসার সুপারকে জানানো হলে তাঁর অনুরোধে ওই শিক্ষক ফেসবুক থেকে ছবিটি সরিয়ে নেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমন অবস্থায় আতঙ্কে ওই ছাত্রী ও তার বোন মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আত্মীয়স্বজনের পরামর্শে ছাত্রীর মা শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত রোববার লিখিত অভিযোগ করেন।

মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। সন্তানদের নিয়ে আমি গ্রামে থাকি। দুই মেয়ে ওই মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। মেয়েকে ডেকে ছবি তোলার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখেছিলাম। কিন্তু ওই ছবির মধ্যে মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে আমরা বিব্রত হই। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে ওই শিক্ষক আমাদের হুমকি দিচ্ছেন। আতঙ্কে দুই মেয়েকে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ কর দিয়েছি। বাধ্য হয়ে ও মেয়েদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছি।’

মাদ্রাসার সুপার বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য ওই শিক্ষককে সতর্ক করা হয়েছে। তবে এখনো তাঁর বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

অভিযুক্ত শিক্ষক বলেন, ‘আমি নতুন একটি স্মার্ট ফেন কিনেছি। ওটা ঠিকঠাক মতো চালাতে পারি না। মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করছি। আমার ফোনে কে ওই ছাত্রীর ছবি তুলেছে এবং তা ফেসবুকে দিয়েছে তা আমি বুঝত পারছি না। বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলে ফেসবুকে প্রবেশ করে ছাত্রীর ছবি দেখে তা সরিয়ে ফেলি।’

ইউএনও মো. মাহাবুর রহমান শেখ বলেন, ‘ঘটনাটি কয়েক দিন আগের। এই মুহূর্তে আমাদের কিছু করণীয় নেই। তাই অভিযোগটি থানায় পাঠানো হয়েছ। পুলিশ আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারবে।’

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্রীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার কোনো অভিযোগ থানায় পৌঁছেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’