অংশগ্রহণ বেড়েছে, অংশীদারত্ব নয়

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। পাশে বুয়েটের ইমেরিটাস অধ্যাপক শামীম জেড বসুনিয়া। গতকাল প্রথম আলো কার্যালয়ে।  প্রথম আলো
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। পাশে বুয়েটের ইমেরিটাস অধ্যাপক শামীম জেড বসুনিয়া। গতকাল প্রথম আলো কার্যালয়ে। প্রথম আলো

স্থাপত্য ও প্রকৌশলের মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। সেখানে তাঁরা দক্ষতার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজও করছেন। তবে অংশীদারত্ব সেভাবে বাড়েনি। সমাজের গৎবাঁধা মানসিকতার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রও নারীবান্ধব নয়।

গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলো কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘নারী স্থপতি ও প্রকৌশলীর আগামী: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচকেরা এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস সামনে রেখে প্রথম আলোর আয়োজনে এই গোলটেবিলে সহযোগিতা করেছে সিমেন্ট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেভেন রিংস্‌ সিমেন্ট।

আলোচকেরা আরও বলেন, স্থাপত্য ও প্রকৌশল পেশায় আসতে ছাত্রাবস্থা থেকেই মেয়েদের ধাপে ধাপে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। অ্যাসাইনমেন্ট করতে গিয়ে রাত হলে পরিবার, আত্মীয়স্বজনের কটু কথা শুনতে হয়। বিয়ের পর চাকরি করা নিয়ে পরিবারে সমস্যা তৈরি হয়। গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পেতে নানা ঝামেলা হয়। তারপরও নিজেদের একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রম দিয়ে এই খাতে নারীরা কাজ করে যাচ্ছেন। এখন প্রয়োজন নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ তৈরির পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, স্থাপত্য, প্রকৌশলসহ নানা চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীদের অংশগ্রহণও বাড়ছে। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক মনমানসিকতার কারণে অংশীদারত্ব নিশ্চিত হচ্ছে না। এ জায়গায় গুরুত্ব দিতে হবে। 

স্থপতি বা প্রকৌশলী হিসেবে কাজের চ্যালেঞ্জ পুরোপুরি সামাজিক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শামীম জেড বসুনিয়া। তিনি বলেন, এ পেশায় আসতে উৎসাহ জোগাতে মেয়েদের সৃজনশীল কাজে যুক্ত করা, পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা করা ও চাকরির বাজার বড় করতে হবে। পাশাপাশি প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে।

সেভেন রিংস্‌ সিমেন্টের পরিচালক তাহ্‌মিনা আহমেদ বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে সফলতার সঙ্গে টিকে থাকতে নারীদের যথাযথ শিক্ষা ও পরিকল্পনা প্রয়োজন। পাশাপাশি এসব সমস্যা রোধে নারীদের নিজেদের শক্ত প্ল্যাটফর্মও দরকার।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কর্মক্ষেত্র—সর্বত্রই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফাহমিদা হক খান। 

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের স্থাপত্য অধিদপ্তরের নির্বাহী স্থপতি তাবাস্‌সুম মাহমুদ বলেন, অনেক সময় মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে নারীরা তাঁর পূর্বের কাজের জায়গা ফেরত পান না। আবার দিবাযত্ন কেন্দ্রের ব্যবস্থা না থাকায় কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না। এসব হতাশা থেকে অনেকে চাকরি ছেড়েও দেন।