সেন্টমার্টিনে ১০১ ব্যাগ বর্জ্য পরিষ্কার করল মেডিকেল শিক্ষার্থীরা

সৈকত থেকে বর্জ্য পরিষ্কার করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: গিয়াস উদ্দিন
সৈকত থেকে বর্জ্য পরিষ্কার করছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: গিয়াস উদ্দিন

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ২০৮ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে একদিনে ১০১ ব্যাগ প্লাস্টিকের বর্জ্য পরিষ্কার করলেন সেন্টমার্টিন সৈকতে। এসব বর্জ্যের ওজন ছিল ৮৩৫ কেজি।

দিন দিন পর্যটকের সমাগম বাড়ছে দ্বীপটিতে। বেড়াতে আসা পর্যটকদের ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে নীল জলরাশির সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৬০তম বিবিএস ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ২০৩ শিক্ষার্থী মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষা সফরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সেন্টমার্টিন দ্বীপে আসে। আজ বুধবার বর্জ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন ৫ শিক্ষকও।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন আহমেদ বলেন, আগামী প্রজন্মের চিকিৎসকদের নিয়ে সৈকতের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। ভবিষ্যতে দেশের বিভিন্ন স্থানের সৈকত পরিষ্কার অভিযান চালানো হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফাতেমা, হাসনা, নুসরাত সুলতানা, ফারজানা, রিফাত আরা, শেফালী, নাইমা হাতে কালো পলিথিন ব্যাগ নিয়ে নেমে গেলেন সৈকতে। তাঁদের মতো আরও ৯টি দল বিভক্ত হয়ে সৈকতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কোমল পানীয় বোতল, চিপস, বিস্কুট, পলিথিনের ব্যাগ ও প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য কুড়িয়ে নিচ্ছিলেন।

এ সময় শিক্ষার্থী সাদ বিন মেহের, অভিজিৎ দাস, হাবিবুল হাসান, আনম বাইজিদ, নুসরাত সুলতানা ও রিফাত আরার সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের ভাষ্য, পড়াশোনার পাশাপাশি সৈকতের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করাও সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো একটি উদ্যোগ। এটি করতে পেরে তাদের ভালো লাগছে।

১০টি ভাগে বিভক্ত হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বর্জ্য সংগ্রহ করেন। ছবি: গিয়াস উদ্দিন
১০টি ভাগে বিভক্ত হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বর্জ্য সংগ্রহ করেন। ছবি: গিয়াস উদ্দিন

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান মুকেশ কুমার দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ২০৩জন শিক্ষার্থীরা ৮৩৫ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করেন। সেন্টমার্টিন পরিষ্কার ও সচেতনতা বৃদ্ধির অভিযানে ২০৩ শিক্ষার্থীকে নিয়ে পাঁচজন শিক্ষকের সমন্বয়ে ১০টি দলে ভাগ করা হয়েছিল।

মেডিকেল কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, ‘এ অভিযান দেখে যদি কেউ ব্যবহৃত পানির প্লাস্টিকের বোতল যত্রতত্র না ফেলে পুনরায় ফেরত আনে তাহলেই সার্থক মনে করব। বছরে দুই-একবার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে সব বদলে যায় না। প্রতিবছর এ নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার আগে এ ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। এতে করে পর্যটকেরা একটু হলেও সচেতন হবে বলে আশা করছি।’

শিক্ষক উম্মে তাসলিমা জাহান ও রাহনুমা রুবাইয়াত বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপন করতে নিজেকে কীভাবে সম্পৃক্ততা করা যায় সে বিষয়ে আগামীদিনের চিকিৎসকদের মাঠ পর্যায়ে এনে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।এ অভিযানে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন বলে তাঁরা মনে করছেন।