মামলায় হাজিরা দিয়ে নিখোঁজের পর লাশ দুই যুবক

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ফেনীর সোনাগাজীতে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত দুই যুবকের পরিচয় জানা গেছে। পরিচয় শনাক্ত করে দুজনের পরিবার বলছে, তাঁরা ডাকাতির মামলায় হাজিরা দেওয়ার পর নিখোঁজ হন। এখন পুলিশ বলছে, দুই দল ডাকাতের মধ্যে গোলাগুলিতে তাঁরা নিহত হয়েছেন।

সোনাগাজী মডেল থানা-পুলিশের ভাষ্য, গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উপজেলার উত্তর মঙ্গলকান্দি গ্রামে দুই দল ডাকাতের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় দুই যুবক নিহত হন।

নিহত দুজন হলেন সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের চর কৃষ্ণজয় গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে শামছুল হুদা ওরফে নিশান (২৩) ও একই ইউনিয়নের ছফরপুর মফিজ চেয়ারম্যান বাড়ির ওবায়দুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৮)।

ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

সকালে দুজনের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি সোনাগাজী থানা-পুলিশ। তবে তারা দাবি করে, নিহত দুই যুবক আন্তজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে গিয়ে দুই যুবকের পরিবারের সদস্যরা লাশ দুটি শনাক্ত করেন।

পুলিশের ভাষ্য, গতকাল রাতে উপজেলার উত্তর মঙ্গলকান্দি এলাকায় দুই দল ডাকাতের মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশ এলাকায় যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতেরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় দুই যুবককে উদ্ধার করে। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. ইসমাঈল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাতে পুলিশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে আনার আগেই ওই দুই যুবক মারা যান।

আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে ছেলে নিশানের লাশ শনাক্ত করেন বাদশা মিয়া। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ফেনী আদালতে একটি ডাকাতির মামলায় হাজিরা দিয়ে নিশান শহরের বড় বাজারে বোনের বিয়ের বাজার করতে যান। দুপুরের দিকে একই মামলার আরেক আসামি সুজন ফোন করে নিশানকে ডেকে নিয়ে যান। তারপর থেকে নিশান নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। আজ সকালে লোকমুখে খবর শুনে তিনি হাসপাতালের মর্গে গিয়ে ছেলের লাশ পান।

বাদশা মিয়ার দাবি, তাঁর ছেলে নিশান গ্রামে কৃষিকাজ করতেন। তাঁকে ডাকাতির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

শরিফুল ইসলামের বাবা ওবায়দুল হক হাসপাতাল মর্গে ছেলের লাশ শনাক্ত করে বলেন, তাঁর ছেলে বৃহস্পতিবার একটি ডাকাতির মামলায় ফেনী আদালতে হাজিরা দিতে যান। আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর থেকে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ ছিল। শুক্রবার সকালে লোকজনের কাছে শুনে তিনি ফেনী হাসপাতালের মর্গে গিয়ে ছেলের লাশ পান। তার ছেলে ‘উপকূল’ নামের একটি পরিবহনে গাড়ির চালক ছিলেন।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই দল ডাকাতের মধ্যে গোলাগুলিতে দুজন নিহত ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় পৃথক মামলা করবে।