করোনার কারণে আকাশপথে যাত্রী কমেছে ৩০%

প্রতীকী ছবি। রয়টার্স।
প্রতীকী ছবি। রয়টার্স।

চীনের গণ্ডি ছাড়িয়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। পর্যটনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আকাশপথে যাত্রী কমছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে বিমান চলাচলেও এর প্রভাব পড়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলেছে, প্রতিদিন প্রায় ৩০ শতাংশ বিমানযাত্রীর আসা-যাওয়া কমে গেছে।

বেবিচক ও শাহজালাল বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে ৮২ লাখ ৬৪ হাজার যাত্রী আসা–যাওয়া করেছে। এর মধ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ওই বছর আসা-যাওয়া করেছে প্রায় ৭১ লাখ যাত্রী। প্রতি মাসে গড়ে যার সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। অর্থাৎ প্রতিদিন ৯ হাজার ৮৩৩ জন যাত্রী দেশে ফিরেছে দেশের বৃহত্তম এই বিমানবন্দর দিয়ে। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ১৬৬ জন। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এই সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৭ হাজার যাত্রী বাংলাদেশে এসেছে।

বর্তমানে দেশীয় বিমান সংস্থার মধ্যে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস এবং বিদেশি বিমান সংস্থার মধ্যে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনস বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতি সপ্তাহে তাদের ৪২টি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করত। তবে করোনাভাইরাসের কারণে গত ২১ জানুয়ারি থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল, চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়। প্রথম দিকে চীন থেকে ঢাকায় সরাসরি আসা ইউএস–বাংলা, চায়না সাউদার্ন ও চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসের যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানারে জ্বর মাপা হতো। করোনাভাইরাসের ব্যাপকতা বাড়লে এর প্রতিরোধের অংশ হিসেবে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের এই তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশফেরত সব যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

>

এক-তৃতীয়াংশ যাত্রী হারিয়েছে বিমান
অন্যান্য কোম্পানির ফ্লাইট সংখ্যাও কমে গেছে
বিদেশফেরত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২১ জানুয়ারি বিশেষ সতর্কতা জারির পর থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল পর্যন্ত ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৩৪ জন যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তাঁদের মধ্যে ২৪ জনের শরীরে জ্বর ছিল।

এদিকে বেবিচকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ২৮টি বিমান সংস্থা তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের কারণে চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে চলাচলকারী বিমান সংস্থার যাত্রীসংখ্যা বেশ কমে গেছে। যাত্রী কমে যাওয়ায় চায়না ইস্টার্ন সপ্তাহে তিন দিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। চায়না সাউদার্নের ফ্লাইট রয়েছে প্রতি সপ্তাহে চার দিন। এ ছাড়া ইউএস-বাংলা প্রতি সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মহিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যাত্রী কমছে, এটি ঠিক। এটি শুধু বিমানের নয়, সব এয়ারলাইনসেরই হচ্ছে। তবে করোনাভাইরাস সারা জীবন থাকবে না। বিমানের এক-তৃতীয়াংশ যাত্রী কমেছে। এর মধ্যে বেশি যাত্রী কমেছে ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর রুটে। তবে এরপরও বিমান মুনাফা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।