কারাগারে বসে প্রার্থী হলেন সন্ত্রাসী টিনু

নূর মোস্তফা টিনু
নূর মোস্তফা টিনু

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারাগারে বসে চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন যুবলীগ নেতা পরিচয় দেওয়া র‍্যাবের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নূর মোস্তফা ওরফে টিনু। তাঁর বিরুদ্ধে চকবাজার ও আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলদারি ও কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

এই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা সাইয়েদ গোলাম হায়দার। এবারও আওয়ামী লীগ তাঁকে সমর্থন দিয়েছে। তিনিসহ এখানে কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থী ছয়জন। এর মধ্যে পাঁচজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। নূর মোস্তফা কারাগারে বসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী তিনি (নূর মোস্তফা) কারাধ্যক্ষের মাধ্যমে প্রার্থী হয়েছেন। নিয়মনীতি মেনেই সব হয়েছে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর নূর মোস্তফাকে র‍্যাব চকবাজার এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি শটগান ও ৭২টি গুলি উদ্ধার করা হয় তখন। এই ঘটনায় র‍্যাব পাঁচলাইশ থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করে। গত ১০ ডিসেম্বর মামলাটির অভিযোগপত্রেও নূর মোস্তফাকে অভিযুক্ত করা হয়।

জানতে চাইলে র‍্যাব-৭–এর সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নূর মোস্তফার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তাঁকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী তিনি।

নূর মোস্তফা হলফনামায় এই অস্ত্র মামলাটির কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া আরও মামলা থাকতে পারে, যা তাঁর জানা নেই বলে হলফনামায় জানানো হয়। আগের তিনটি মামলায় অব্যাহতি ও খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামা সূত্রে জানা যায়।

ব্যবসা থেকে তাঁর বছরে আয় দেখানো হয় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্য আরেকটি খাতে বছরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লভ্যাংশ পান বলে উল্লেখ করা হয়। নূর মোস্তফার নগদ ৯০ হাজার এবং ব্যাংকে জমা দেখানো হয় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৭৭ টাকা। ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮৫ টাকার জীবন বিমা করা রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া অন্যান্য ব্যবসায় ১২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বিনিয়োগ দেখানো হয়। তাঁর স্থাবর কোনো সম্পদ নেই বলে জানানো হয়েছে।

সাইয়েদ গোলাম হায়দার চকবাজার থেকে প্রথম ওয়ার্ড কমিশনার হন ১৯৭৭ সালে। এরপর ১৯৯৪ সাল থেকে পাঁচবার একই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন এই প্রবীণ নেতা।

প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইয়েদ গোলাম হায়দার বলেন, ‘যেহেতু তিনি (টিনু) দণ্ডপ্রাপ্ত নন, তাই তাঁরও অধিকার রয়েছে নির্বাচন করার। আমি স্বাগত জানাই। আমাদের দলের পাঁচজন এখানে। ভোট দেওয়ার মালিক জনগণ।’