ঝরে পড়া ঠেকাতে শিশুদের খেলনা উপহার ইউএনওর

গোয়াইনঘাটের ইউএনওর হাত থেকে খেলনা পেয়ে আনন্দিত শিশুরা। ছবিটি আজ শনিবার সিলেটের গোয়াইনঘাটের গুচ্ছগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
গোয়াইনঘাটের ইউএনওর হাত থেকে খেলনা পেয়ে আনন্দিত শিশুরা। ছবিটি আজ শনিবার সিলেটের গোয়াইনঘাটের গুচ্ছগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের গোয়াইনঘাটে গুচ্ছগ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা। খেয়াল-খুশিমতো বিদ্যালয়ে উপস্থিতি তাদের। বিদ্যালয়ে তাদের উপস্থিতি নিয়মিত করতে এবং ঝরে পড়া ঠেকাতে শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হলো খেলনাসামগ্রী। বিদ্যালয়ে গিয়ে হঠাৎ খেলনা হাতে পেয়ে আনন্দিত গুচ্ছগ্রামের ৬০ শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়গামী নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুদের মন চাঙা করতে এ রকম এক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন বলে জানান সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুস সাকিব। আজ শনিবার সকালে তিনি গুচ্ছগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের ৬০ শিক্ষার্থীর হাতে বিভিন্ন খেলনাসামগ্রী তুলে দেন।

গোয়াইনঘাটের ইউএনও সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকাকালে গত বছর বন্যার সময় ত্রাণসামগ্রীর সঙ্গে শিশুদের জন্য খেলনা বিতরণ করেছিলেন। এ নিয়ে গত বছরের ১৯ জুলাই প্রথম আলোয় একটি সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়।

ইউএনও নাজমুস সাকিব বলেন, জাপানে পড়াশোনার সময় তিনি দুর্যোগকালে শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষ কিছু করণীয় সম্পর্কে জানতে পারেন। পরবর্তী সময়ে সুনামিতে আক্রান্ত পরিবার ও আশ্রয়কেন্দ্রে কীভাবে শিশু-কিশোরদের বিষয়টি আলাদা করে ভাবা হয়, সেটি দেখা থেকে শিখেছেন তিনি। পানিবন্দী বাড়িঘরে সরকারি খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি কিছু খেলনা বিতরণ করে সেই অভিজ্ঞতার প্রয়োগ করে দেখা গেছে, শিশুরা এতে উচ্ছ্বসিত হয়। সেই অভিজ্ঞতা তিনি গোয়াইনঘাটের নিম্নবিত্ত পরিবারের স্কুলগামী শিশুদের মধ্যে প্রয়োগ করে ভালো কিছু আশা করছেন।

ইউএনও প্রথম আলোকে বলেন, নির্মল বিনোদন হচ্ছে পড়ালেখার একটি অংশ। শিশুদের কোনোভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে নয়, আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়াই সঠিক পথ। শিক্ষার্থীরা যাতে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে এবং পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের বিনোদনের জন্য খেলাধুলায় নির্দিষ্ট একটা সময় দেয়, বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করতে তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

খেলনা সামগ্রী বিতরণ শেষে ইউএনও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় উৎসাহ জোগাতে তাদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক সময় কাটান তিনি। তাঁর দেওয়া খেলনাসামগ্রীর মধ্যে আছে প্লাস্টিকের ঘোড়া, ক্রিকেট বল, দুরবিন প্রভৃতি।

প্রধান শিক্ষক সোহেল আহমদ বলেন, নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তানেরা এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ জন্য প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতেই বেশি ঝরে পড়ার প্রবণতা থাকে। খেলনাসামগ্রী পেয়ে ওই শ্রেণির ৬০ শিশুর মধ্যে অন্য রকম আনন্দ দেখা গেছে। এ রকম কর্মসূচির ধারাবাহিকতা থাকলে অবশ্যই ঝরে পড়া ঠেকানো সম্ভব।