বিরোধপূর্ণ জায়গা দখলে নিয়ে যুবলীগের ব্যানার

দখল করা জায়গায় তোলা ঘর। গতকাল শেরপুরের  বেলতলা গ্রামে।  প্রথম আলো
দখল করা জায়গায় তোলা ঘর। গতকাল শেরপুরের বেলতলা গ্রামে। প্রথম আলো

বগুড়ার শেরপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত শুক্রবার এক দম্পতিকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। যুবলীগের এক নেতা এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি জোরপূর্বক জমিটি দখলে নিয়ে সেখানে ঘর তুলে যুবলীগের সম্মেলন নিয়ে পুরোনো একটি ব্যানারও টাঙিয়ে দিয়েছেন।

আহত দম্পতি হলেন হাফিজার রহমান (৪০) ও বেলী বেগম (৩৫)। তাঁরা উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের বেলতলা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের ওপর হামলায় জড়িত বলে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মাহবুবর রহমান। তিনি একই গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি।

বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন হাফিজার ও বেলী। এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হাফিজার রহমানের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত রয়েছে। বেলী বেগমের ডান হাতের কবজি ভেঙে গেছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেলী বেগম গতকাল শনিবার বলেন, এক আত্মীয়ের কাছ থেকে তাঁর শ্বশুরের কেনা ১৫ শতাংশ জমির এক পাশে তাঁদের বসতবাড়ি। আরেক পাশে অন্তত ৭ শতাংশ জায়গা ফাঁকা। সেখানে তাঁরা সবজির চাষ করেন। এ জায়গা দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে আসছিলেন মাহবুবর রহমান। তিনিও তাঁদের আত্মীয় হন। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা প্রায় এক বছর আগে বগুড়ার আদালতে মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলছে। তবু নানাভাবে জমিটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে আসছিলেন মাহবুবর। সর্বশেষ গত শুক্রবার মাহবুবর তাঁর লোকজনকে নিয়ে এসে জমিটা দখল করে নেন। এতে বাধা দিতে গেলে তাঁদের পিটিয়ে আহত করেন হামলাকারীরা। পরে মাহবুবরের লোকজন ওই জমিতে থাকা করলা ও পেঁপেগাছগুলো কেটে ফেলেন।

গতকাল সরেজমিনেবেলতলা গ্রামে কথা হয় স্থানীয় পাঁচজন নারীর সঙ্গে। তাঁদের ভাষ্য, দখলে নেওয়া জমিটি কাগজে-কলমে কার, তা তাঁরা জানেন না। তবে দীর্ঘকাল ধরে হাফিজার রহমান এখানে বসবাস করে আসছেন।

আহত হাফিজারের মা জাহানারা বেগম বলেন, গতকাল সকাল ১০টার দিকে মাহবুবরসহ ৫০-৬০ জন তাঁদের বাড়িতে আসেন। তাঁরা তাঁর ছেলে ও ছেলের বউকে পিটিয়ে আহত ও সবজিবাগান নষ্ট করার পাশাপাশি ওই জায়গায় তাৎক্ষণিকভাবে বাঁশের খুঁটি পুঁতে ওটিনের ছাউনি দিয়ে ঘর তুলে ফেলেন। ঘরের মধ্যে এনে রাখা হয় একটি খাট। পরে সেখানে ইউনিয়ন যুবলীগের একটি পুরোনো ব্যানারঝুলিয়ে রেখে হামলাকারীরা চলে যান।

জানতে চাইলে মাহবুবর রহমান স্বীকার করেন, শুক্রবার তিনি ওই জায়গা দখল নিয়েছেন। তবে জমিটি তাঁর পৈতৃক বলে তিনি দাবি করেন। মাহবুবর বলেন, তিনি থানা-পুলিশের মাধ্যমে আপস করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হাফিজার রহমান তা মানেননি।