প্রেমে রাজি না হওয়ায় মারধর করে ভিডিও প্রকাশ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

ঝুলন্ত লাশ। ছবিটি প্রতীকী
ঝুলন্ত লাশ। ছবিটি প্রতীকী

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মারধর করে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ায় এক কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। ওই ছাত্রীর নাম পিয়া চাকমা। তাঁর বাড়ি উপজেলার উদালবাগান খামার পাড়া এলাকায়। তিনি দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

এ ঘটনায় আজ রোববার সকালে ওই ছাত্রীর ক্ষুব্ধ সহপাঠীরা উত্ত্যক্তকারী তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করে পুলিশে কাছে সোপর্দ করেছে। পুলিশ ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

পুলিশ, ছাত্রীর পরিবার ও কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল শনিবার দুপুরে দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী পিয়া চাকমা কলেজ থেকে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে থানা বাজারের নতুন সেতু নারিকেল বাগান পূর্ব পাড় এলাকায় একই কলেজের শিক্ষার্থী অনিক জীবন চাকমা তাঁর দুই সহপাঠীকে নিয়ে তাঁর পথরোধ করেন। তিনি পিয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। পিয়া তা প্রত্যাখ্যান করলে তাঁকে তিন শিক্ষার্থী মারধর করেন। তাঁকে মারধরের ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করা হয়। পরে ধারণকৃত ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে পিয়া গতকাল রাতের কোনো এক সময়ে আত্মহত্যা করেন। আজ কলেজে তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওই তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে।

আটককৃত শিক্ষার্থীরা হলেন কামাকুছড়া এলাকার সুমন্ত চাকমা, শান্তিপুর এলাকার জয়েশ চাকমা ও জোড়াব্রিজ এলাকার অনিল জীবন চাকমা। আটকৃত তিন শিক্ষার্থীও এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তবে তাদের দাবি, তাঁরা পিয়া চাকমাকে চেনেন না।

পিয়ার বাবা জীবিকাময় চাকমা ও মা চিকন মিলা চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল কলেজ থেকে এসে পিয়া বাড়িতে কিছু বলেননি। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আজ ভোররাতে পিয়ার বড় বোন পুস্পলিকা চাকমা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ওঠে ঘরের দরজা খোলা পান। তিনি সবাইকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলেন। পরে খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পাশের আম গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পিয়াকে পাওয়া যায়।

পিয়া চাকমার বড় ভাই কল্যাণ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই ভাই, তিন বোনের মধ্যে পিয়া সবার ছোট। কী থেকে কী হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না। সে বাড়িতে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই দেয়নি। আমরা মামলা করতে রাজি নই।’

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব প্রথম আলোকে বলেন, কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা না করলেও পুলিশ বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করবে।