যক্ষ্মা শনাক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ গাড়ি

রাজধানীর হাতিরঝিলের মুক্তমঞ্চে ভ্রাম্যমাণ এক্স-রে গাড়ির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: পিআইডি
রাজধানীর হাতিরঝিলের মুক্তমঞ্চে ভ্রাম্যমাণ এক্স-রে গাড়ির মাধ্যমে চিকিৎসা সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: পিআইডি

যক্ষ্মা শনাক্তকরণে উন্নত প্রযুক্তির সংযোজিত ভ্রাম্যমাণ এক্স-রে গাড়ি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিকে আরও বেগবান করতে এনটিপির আওতায় ব্র্যাক এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।

চলতি মার্চ মাস থেকে আপাতত এই দুটি ভ্রাম্যমাণ গাড়ির কার্যক্রম শুরু হবে। একটি ভ্রাম্যমাণ গাড়ির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নগরের বিভিন্ন বস্তি, পোশাক কারখানা এবং তিনটি কারাগারে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। কারাগারগুলো হলো কাশিমপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকেও এই সেবা দেওয়া হবে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর হাতিরঝিলের মুক্তমঞ্চে ভ্রাম্যমাণ এক্স-রে গাড়ির মাধ্যমে চিকিৎসাসেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এই ভ্রাম্যমাণ গাড়ির মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ জন রোগী এক্স-রে করার সুযোগ পাবেন। একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান ও রেডিওগ্রাফারের মাধ্যমে সম্ভাব্য রোগীকে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অনলাইন পদ্ধতিতে দ্রুত ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হবে। বিপুলসংখ্যক মানুষের চাহিদার নিরিখে এই বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যে এ রকম আরও দুটি গাড়ি চালু হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর মো. শামিউল ইসলাম, ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজেস ও ওয়াশ কর্মসূচির পরিচালক মো. আকরামুল ইসলাম, একই সংস্থার কমিউনিকেবল ডিজিজেস (টিবি কন্ট্রোল) কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক মাহফুজা রিফাত এবং বিভিন্ন দাতা ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।

ভ্রাম্যমাণ গাড়ি কার্যক্রমের পাশাপাশি ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উপলক্ষে সচেতনতা আনয়ন ও মুজিব শতবর্ষকে ঘিরে যক্ষ্মা প্রতিরোধকে গুরুত্ব দিয়ে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ড্রামা শো ও জলের গানের পরিবেশনায় কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির (এনটিপি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ২ লাখ ৯২ হাজার ৯৪২ জন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এনটিপি সূত্র অনুযায়ী, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সব ধরনের (কফে জীবাণুযুক্ত ও কফে জীবাণুবহির্ভূত) যক্ষ্মা রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসার সাফল্যের হার ৯৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সরকারের আশাব্যঞ্জক সাফল্য সত্ত্বেও যক্ষ্মার ঝুঁকির বিবেচনায় বাংলাদেশে এটি এখনো মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত।