গুজব-গণপিটুনি রোধে হাইকোর্টের ৫ নির্দেশনা

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

গুজব ছড়ানো ও গণপিটুনির ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন।

গত বছরের জুলাই মাসে রাজধানীতে তাসলিমা বেগমসহ গণপিটুনিতে বেশ কয়েকজনকে হত্যার প্রেক্ষাপটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার এই নির্দেশনা দিলেন হাইকোর্ট।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।

পাঁচ দফা নির্দেশনা হলো:

১. পুলিশের প্রত্যেক সার্কেল অফিসার (এএসপি) তাঁর অধীনের প্রতিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে ৬ মাসে অন্তত একবার গণপিটুনিপ্রবণতার বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৈঠক করবেন।

২. গণপিটুনির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার প্রচার কার্যক্রম ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রচারণা অব্যাহত রাখবে।

৩. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের অডিও, ভিডিও, খুদে বার্তা, যা গুজব সৃষ্টি বা গণপিটুনিতে মানুষকে উত্তেজিত করতে পারে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যে দুষ্কৃতকারীরা এ কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৪. যখনই গণপিটুনির কোনো ঘটনা ঘটবে, কোনো রকম দেরি না করে তখনই থানার ওসি এফআইআর নিতে বাধ্য থাকবেন এবং তা সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারকে অবহিত করবেন।

৫. গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম হত্যার ঘটনায় ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তর বাড্ডা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অবহেলার ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২০ জুলাই রাজধানীর উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানের ভর্তির খোঁজ নিতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন তাসলিমা।

এ ছাড়া একই মাসে (জুলাই) বেশ কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনাও ঘটে। ওই সময় গণপিটুনি রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টে রিট করেন।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত বছরের ২৬ আগস্ট গণপিটুনিতে নিহত ব্যক্তিদের জীবন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে গণপিটুনির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন।