হাওয়া ভবনের কাজই ছিল ব্যবসায় ১০ শতাংশ কমিশন আদায়: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সরকারের পাশাপাশি ‘হাওয়া ভবন’ বানিয়ে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করছিল। তিনি বলেছেন, হাওয়া ভবনের মূল কাজ ছিল যেকোনো ব্যবসায় ১০ শতাংশ কমিশন বসিয়ে তা আদায় করা। এ কথা দেশের মানুষও জানে।

দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। আজ সোমবার রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে এ অনুষ্ঠান হয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান সরকারের দুর্নীতি প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, এর জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি (ফখরুল) যে কথা বলেছেন, তা তাঁদের দলের নেতা-নেত্রীদের বেলাতেই প্রযোজ্য। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তাই মির্জা ফখরুল যেসব কথা বলেছেন, সেটি তাঁদের বেলাতেই প্রযোজ্য।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দুর্নীতির বিষয়ে এফবিআই বাংলাদেশে এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। সে জন্য তাঁর ১০ বছর কারাদণ্ড হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জরিমানা দিয়ে কালোটাকা সাদা করেছেন উল্লেখ করে হাছান বলেন, খালেদা জিয়ার আরেক ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর দুর্নীতির মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে পাচার করা অর্থ সে দেশ থেকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। এসব ঘটনা বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা উদঘাটন করেছে, বাংলাদেশ সরকার নয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করছে বিধায় দেশের উন্নতি হয়েছে। মাথাপিছু আয় ৬০০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে এখন দুই হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আমরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছি। পাকিস্তান সে জন্য আক্ষেপও করে।’

সরকার কখনোই আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে তারা (বিএপি) বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে পায়নি। কারণ, বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক বন্দী নন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা (বিএনপি) বেগম জিয়ার জামিন চাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) তাঁকে (খালেদা জিয়া) উন্নত চিকিৎসাও দেওয়া হচ্ছে। সে বিবেচনায় আদালত খালেদাকে জামিন দেননি, এটি আদালতের এখতিয়ার। হাছান বলেন, ‘আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন বিধায় আমাদের দলের মন্ত্রীদেরও হাজিরা দিতে হয়। আমাদের দলের মন্ত্রী-এমপিরা দুদকের করা মামলায় জেলেও গেছেন।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির শাসনামলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের গণমাধ্যম উন্নত অনেক দেশের তুলনায় অনেক বেশি স্বাধীন এবং স্বাধীনভাবে যেমন কাজ করছে, তেমনি পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে। ‘গণমাধ্যমবান্ধব প্রধানমন্ত্রী’ ক্ষমতায় রয়েছেন বলেই এটি সম্ভব হযেছে। হাছান মাহমুদ এ সময় উল্লেখ করেন, ১১ বছর আগে দেশে ৪৫০ দৈনিক পত্রিকা ছিল। এখন পত্রিকা রয়েছে ১ হাজার ২৫০। আগে যেখানে ‘অন-এয়ারে’ ছিল ১০টি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, আর এখন ‘অন-এয়ারে’ রয়েছে ৩৪টি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল।

তথ্যমন্ত্রী কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক রমজানুল হক নিহাদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা ও সাংবাদিকেরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।