ইউটার্ন কমেছে, ব্যয় বেড়েছে

জটিলতা শেষে ইউটার্ন নির্মাণের কাজ আবার শুরু হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী ১১টির পরিবর্তে ইউটার্ন হবে ১০টি। একটি ইউটার্ন কমে গেলেও প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রথম নির্বাচিত মেয়র আনিসুল হক সাতরাস্তা মোড় থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কের ১১টি স্থানে ইউটার্ন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে উত্তরার জসীমউদ্‌দীন, রাজলক্ষ্মী বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় ইউটার্ন নির্মাণের কাজ শেষ। কাওলা বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে আরেকটি ইউটার্ন নির্মাণের কাজ চলছে। এখন বনানী উড়ালসড়কের নিচে, বনানী-কাকলী রেলস্টেশন, চেয়ারম্যানবাড়ী, মহাখালী উড়ালসড়ক, মহাখালী আন্তনগর বাস টার্মিনাল ও কোহিনূর কেমিক্যালস থেকে সাতরাস্তা ইন্টারসেকশনসহ সাতটি স্থানে ইউটার্ন নির্মাণ করা হবে। সংশোধিত প্রকল্পে আর্মি গলফ ক্লাবের সামনের ইউটার্ন নির্মাণের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়েছে।

ডিএনসিসি সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএম কনস্ট্রাকশন ইউটার্ন নির্মাণের কাজ শুরু করে। কিন্তু শুরুতে কিছু জটিলতা দেখা দেয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কিছু স্থাপনা ভাঙতে গেলে তারা বাধা দেয়। পরে সংশোধিত প্রকল্পে সওজের স্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করায় সমস্যা কেটে গেছে।

প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করছে ডিএনসিসির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরহাদ জানান, ‘সড়ক ও জনপথ বিভাগের বাধার কারণে কাজ থেমে গিয়েছিল। তবে প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু করতে পেরেছি। নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেলে জনসাধারণ এর সুফল ভোগ করতে পারবে।’ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ডিএনসিসি সূত্র জানায়, শুরুতে ১১টি ইউটার্ন নির্মাণের জন্য ২৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। সংশোধিত প্রকল্পে ১০টির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। একটি ইউটার্ন নির্মাণের কাজ বাদ গেলেও আগের থেকে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ৬ কোটি ৯৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।

ডিএনসিসির প্রকৌশল শাখার কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় প্রকল্পের অনুমোদন পেতেই লেগে যায় দুই বছরের বেশি সময়। এরপর প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সংশোধিত প্রকল্পের কাজ ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার কথা।

সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী, সড়ক, নালা ও ফুটপাত সংস্কারের জন্য ২২ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। সীমানাদেয়াল, নালা, গ্যারেজ ও টিনশেড ঘর অপসারণ ও পুননির্মাণের জন্য ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ডেসকো, ওয়াসা, বিটিসিএল, তিতাস ও অন্যান্য পরিষেবার সংযোগ স্থানান্তর ও অপসারণ বাবদ ১ কোটি ৯১ লাখ ৯ হাজার টাকা ব্যয় হবে। এ ছাড়া ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্যয় হবে ৫ কোটি ৫ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙতে হবে। সওজকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এই টাকা দেওয়া হবে।

ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও ডিএনসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষতিপূরণ বাবদ সওজ কর্তৃপক্ষকে যে টাকা দিতে হবে, সেটা প্রথমে উল্লেখ ছিল না। তাই ব্যয় বেড়েছে। তিনি বলেন, সওজ কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করলেই কাজ করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।