বিচারক প্রত্যাহারে আইনের শাসনের ব্যত্যয় হয়নি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যই এই ব্যবস্থা: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রথম আলো ফাইল ছবি
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম আবদুল আউয়াল ও তাঁর স্ত্রীর জামিন চাওয়াকে কেন্দ্র করে সেখানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণ বা প্রশমিত করার জন্যই জেলা জজকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখানে আইনের শাসনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।

ঢাকায় আজ বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, এই জামিন চাওয়াকে কেন্দ্র করে আবদুল আউয়ালের আইনজীবী এবং বারের আইনজীবীদের সঙ্গে জেলা জজ অত্যন্ত অশালীন ও রূঢ় ব্যবহার করেন। এর ফলে বারের আইনজীবীরা আদালত বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন এবং লোকজন রাস্তায় বেরিয়ে যায়। সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিচারককে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, জামিন দেওয়া না–দেওয়ার এখতিয়ার সম্পূর্ণ আদালতের, কিন্তু আদালত যদি এমন কোনো ব্যবহার করেন, এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন, যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং আইনের শাসন রক্ষা করা প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তখন কিন্তু ব্যবস্থা নিতে হয়। সেই অবস্থার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখানে আইনের শাসনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মামলার মেরিট নিয়ে কথা বলতে চাই না। এখনো এই মামলার চার্জশিট হয়নি, শুধু এফআইআর (এজাহার) হয়েছে। হাইকোর্ট তাঁকে (এ কে এম আবদুল আউয়ালকে) অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন। সেই জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে চ্যালেঞ্জ করতে গেলে আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দিয়েছিলেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘বারের সঙ্গে এই জেলা জজ যে ব্যবহার করেছেন, সেটা না করলে আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তাঁর এই ব্যবহার করাটা সমীচীন হয়নি। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত হচ্ছে, বিচার হচ্ছে। এটা আপনারা দেখছেন। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যে ব্যবস্থা নিতে হয়, সেটা আমাকে নিতেই হবে। এখানে সরকারি দলের লোক না বিরোধী দলের লোক, সেটা বিবেচনা করা হয়নি। পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয়, সে জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

মানব পাচার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের মানব পাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে। আমরা যদি মানব পাচার আদালত তাড়াতাড়ি স্থাপন না করি, তাহলে আমাদের তৃতীয় স্তরে নামিয়ে দেওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সাতটি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করেছি এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে এটি কাজ শুরু করবে। এটি দেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’