মহাস্থানগড়ে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে নতুন নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি মহাস্থানগড় এলাকায়। ফাইল ছবি।
বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে নতুন নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি মহাস্থানগড় এলাকায়। ফাইল ছবি।

বগুড়ার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান মহাস্থানগড় এলাকায় মাটি খননসহ সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

একই সঙ্গে মহাস্থানগড় এলাকায় পুলিশ বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করার নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে পুলিশ সুপার ও বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

রিটকারী আইনজীবী ও হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি মনজিল মোরশেদ প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি ‘মহাস্থানগড়ে দখল থেমে নেই, দুর্গনগরীর ভেতর ৮০০ স্থাপনা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় প্রথম আলোয়। প্রতিবেদনটি নজরে আনার পর হাইকোর্ট এক আদেশে মহাস্থানগড় এলাকায় সব ধরনের স্থাপনা নির্মাণ এবং মাটি খনন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। বগুড়ার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শিবগঞ্জ থানার ওসিসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরশেদ জানান, ২০১০ সালের শেষ দিকে মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নষ্ট করে স্থাপনা নির্মাণ, মাজার সম্প্রসারণ এবং প্রত্নস্থল খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ চেয়ে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বগুড়ার তৎকালীন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন এবং মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চান।

প্রথম আলোর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নথিতেই সব মিলিয়ে মহাস্থানগড় প্রত্নস্থল এলাকায় ১১৩টি পাকা বাড়ি, ৫৫৩টি সেমি পাকা স্থাপনা এবং ১৯৬টি কাঁচা বসতবাড়ি নির্মাণ করা হয়।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হান্নান মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, দুর্গনগরী ও প্রত্নস্থল এলাকায় বসতি রেখে মহাস্থানগড়ের বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে ৩১৯ একর ব্যক্তিমালিকানা জমি অধিগ্রহণ এবং নিরাপত্তার জন্য আরও ২০০ আনসার চেয়ে গত ২২ ডিসেম্বর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়।