আগুনে মারা যাওয়া লোকটির পরিচয় এখনো অজানা

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র-সংলগ্ন পশ্চিম দিকের মাঠে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, তিনি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যা করেছেন। তবে ঘটনার প্রায় এক দিন হয়ে গেলেও ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। এমনকি থানা-পুলিশের সঙ্গে কেউ যোগাযোগও করেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাণিজ্য মেলা যেখানে আয়োজন করা হয় সেই মাঠের পশ্চিম প্রান্তে গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে জ্বলন্ত অবস্থায় একজন লোককে দেখা যায়। মনে হয় নিজের গায়ে দাহ্য তরল পদার্থ নিজের গায়ে ঢেলে আগুন ধরান তিনি। মাঠের যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, তার চারপাশে বাণিজ্য মেলায় ব্যবহৃত ইট বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। রাতে নিরিবিলি থাকায় খুব বেশি লোকজনও সেখান দিয়ে চলাচল করে না। মুখসহ তাঁর সারা শরীর পুড়ে যায়। মিনিট বিশেক পর মোহাম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে অগ্নিদগ্ধ লোকটিকে উদ্ধার করে। 


মোহাম্মদপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র অফিসার রায়হানুল আশরাফ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে আসার আগেই লোকটি মারা গেছেন। তাঁর পুরো শরীর আগুনে ছাই হয়ে গেছে। মনে হয় কেরোসিন ঢালা ছিল তাঁর শরীরে। আগুনের কারণে লোকটির দুই হাত উঁচু এবং শরীরটা বাঁকা ছিল। চেহারা চেনা যাচ্ছিল না তাঁর। লাশটি বডিব্যাগে ভরে শেরেবাংলা নগর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারীরা জানান, লাশের পাশে এক জোড়া স্যান্ডেল পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

লাশের সুরতহাল করেছেন শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূরুল ইসলাম। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পাশের সড়ক থেকে সোজা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দিকে যাওয়ার পথে একটি পোস্ট অফিস রয়েছে। সেখান থেকে প্রায় এক শ গজ পশ্চিমে মাঠে ঘটনাটি ঘটেছে। লোকটিকে রাতে ওই মাঠে হাঁটতে দেখেছেন কয়েকজন লোক। হঠাৎ তাঁরা দেখতে পান যে, হাঁটার সময় লোকটি নিজের গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরান। দূর থেকে এ দৃশ্য দেখে কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করতে আসেন। পাশের সড়ক থেকে গাড়ি থামিয়েও কয়েকজন ছুটে আসেন। কিন্তু উদ্ধারের আগেই লোকটি মারা যান। লোকটির হাঁটুর ওপরে প্যান্টের কাপড় ছাই হয়ে লেপ্টে ছিল। তা ছাড়া মুখ, হাত, চোখ, বুকের চামড়া সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।

এসআই নূরুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে লোকটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট। তাঁর হাতের সব আঙুল পুড়ে গেছে। তাই পরিচয় জানার জন্য আঙুলের ছাপও নেওয়া যাচ্ছে না। তবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাঁর বাবা-মাসহ নিকটাত্মীয়ের পরিচয় দিয়ে কেউ তাঁদের সঙ্গে সেটি মিলিয়ে পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু ঘটনার তদন্তে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।