টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' রোহিঙ্গা নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম অজি উল্লাহ (৩০)। তিনি মিয়ানমারের মংডুর শহরে ইনসং গোদাপাড়া (বর্তমানে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের ই-ব্লকের) বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের ছেলে। পুলিশের দাবি, অজি উল্লাহ রোহিঙ্গা ডাকাত জকির আহমদের সেকেন্ড ইন কমান্ড ও তাঁর ভাগনে।

আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিবছড়া পাহাড়ের পাদদেশে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া এলাকার পাহাড়ে একদল রোহিঙ্গা ডাকাত অবস্থান করছেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম এস দোহার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি করে। গুলি বিনিময়ের ঘটনায় আহত হন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম এস দোহা, উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুদ্দিন ও কনস্টেবল খোকন মিয়া। একপর্যায়ে ডাকাতেরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায়সহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। অন্য তিনজন হলেন হ্নীলার নয়াপাড়ার বাসিন্দা খোরশেদ আলম (৩৯), জাদিমোরা রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বি ব্লকের আমিন (২৫) ও টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজার ছড়ার সাইফুল ইসলাম (২০)।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাইমা সিফাত প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে পুলিশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিসহ চারজনকে হাসপাতালে আনেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁর শরীরে দুটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত পুলিশের তিনজন সদস্যকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওসি বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

পুলিশের ভাষ্যমতে, ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনীর দুটি জ্যাকেট, র‌্যাবের পাঁচটি শার্ট, দুটি প্যান্ট, আরকান বিজিপির পাঁচটি শার্ট, তিনটি প্যান্ট, এলজি তিনটি, ৩৬টি খোসা, তাজা গুলি একটি, একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি গুলি, খোসা একটি, একটি ম্যাগজিন ও ২ হাজার ২০০ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় আজ বিকেল পর্যন্ত চারজন নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২২১ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই নারীসহ ৭৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন।