স্ত্রীকে পিটিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফাঁসলেন তিনি

স্বামীকে না বলে স্ত্রী গিয়েছিলেন পাশে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে। বাড়ি ফিরে স্বামী এ ঘটনা জানার পর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় ছেলে মাকে রক্ষা করতে গেলে উল্টো ছেলের নামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দেন, নিজ ছেলে তাঁকে মারধর করেছেন। এ জন্য তিনি উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করেন।

কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। ধরা পড়লেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে। পরে আদালত ওই ব্যক্তিকে পাঁচ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। ঘটনাটি গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার একটি গ্রামে ঘটে।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম মুজিবুর রহমান (৬০)। তিনি কেন্দুয়ার মাসকা কান্দাপাড়া এলাকা বাসিন্দা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বিকেলের দিকে মুজিবুর রহমান ইউএনও আল-ইমরান রহুল ইসলামের কাছে হাজির হন। এ সময় তিনি কাঁদতে কাঁদতে অভিযোগ করেন, নিজ ছেলে কিছুক্ষণ আগে মারধর করে বাড়ি থেকে তাঁকে বের করে দিয়েছেন। একপর্যায়ে তিনি ইউএনওর হাত ধরে ছেলেকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার দাবি জানান। বিষয়টি শুনে ইউএনও তাৎক্ষণিক পুলিশসহ ঘটনাস্থলে যান। ততক্ষণে ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এ সময় লোকজন জড়ো হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে। আসলে তিনি নিজেই তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়েছেন। তিনি ঘরে ফিরে স্ত্রীকে পাননি। পরে জানতে পারেন স্ত্রী তাঁকে না বলে রান্নাবান্না রেখে পাশে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। পরে স্ত্রী বাড়ি ফিরলে ক্ষিপ্ত হয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করেন। এ সময় ছেলে (২৫) মাকে মার খাওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য বাবাকে থামাতে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে বাবাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এ ঘটনায় মুজিবুর পুলিশের কাছে নালিশ দেবেন বলে জানিয়ে গেলে ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
পরে সন্ধ্যার দিকে ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসালে মুজিবুর আদালতের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী উল্টো স্বামীর পক্ষে আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত তাঁকে পাঁচ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

এ ব্যাপারে ইউএনও মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অপরাধমূলক বল প্রয়োগের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত দণ্ডবিধির ৩৫৫ ধারায় অভিযোগ গঠন করে মুজিবুরকে পাঁচ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।