গাইবান্ধা-৩ উপনির্বাচন: বিএনপির প্রার্থীর সম্পদ বেশি

উম্মে কুলসুম, মইনুল হাসান সাদিক, খাদেমুল ইসলাম, মইনুল রাব্বী চৌধুরী
উম্মে কুলসুম, মইনুল হাসান সাদিক, খাদেমুল ইসলাম, মইনুল রাব্বী চৌধুরী

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী) আসনের উপনির্বাচন ২১ মার্চ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জাসদের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রচার–প্রচারণায় মুখর পুরো এলাকা। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উম্মে কুলসুমের তুলনায় বিএনপির প্রার্থী মইনুল হাসান সাদিকের সম্পদ বেশি। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মইনুল রাব্বী চৌধুরী ও জাসদের প্রার্থী এস এম খাদেমুল ইসলামের স্থাবর সম্পদ বেশি।

উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে দাখিল করা তাঁদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম। তিনি তাঁর হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তাঁর ১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৫ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদ হিসেবে তিনি ২১ লাখ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৫ টাকা দেখিয়েছেন। তাঁর স্থাবরের চেয়ে অস্থাবর সম্পদ বেশি। 

উম্মে কুলসুম হলফনামায় আরও উল্লেখ করেন, তাঁর বার্ষিক আয় ১৪ লাখ ৫১ হাজার ১৭০ টাকা। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র থেকে আয় ১ লাখ ৫১ হাজার ১৭০ টাকা, আইন পেশা থেকে ৯ লাখ ৭০ হাজার ও অন্যান্য খাত থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। হলফনামায় তিনি স্থাবর সম্পদ দেখান ২১ লাখ টাকার। এর মধ্যে ৬ লাখ টাকা মূল্যের অকৃষিজমি ও ১৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট আছে।

উম্মে কুলসুমের অস্থাবর সম্পদের মূল্য ১ কোটি ৭৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৫ টাকা। এর মধ্যে নগদ ২৩ লাখ ৫৪ হাজার ৮০ টাকা, ব্যাংকে ৪২ লাখ ৩২ হাজার ২০৫ টাকা, বন্ড হিসেবে আছে ১০ লাখ ২৫ হাজার ১০৮ টাকা, সঞ্চয়পত্র ৪০ লাখ টাকা, মোটরগাড়ি ৫৫ লাখ ২২ হাজার ১৪২ টাকা, অলংকার ৫০ তোলা, ইলেকট্রনিকসসামগ্রী ২ লাখ টাকা, আসবাব ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে উম্মে কুলসুম মুঠোফোনে বলেন, ‘হলফনামায় আমি সঠিক তথ্য দিয়েছি।’

 উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মইনুল হাসান সাদিক। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি। হলফনামা অনুযায়ী তাঁর ২ কোটি ২৪ লাখ ৮৮ হাজার ৫৪৭ টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদ ৮৫ লাখ ৭৮ লাখ ৪৭০ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৩৯ লাখ ১০ হাজার ৭৭ টাকা। তাঁর স্থাবরের চেয়ে অস্থাবর সম্পদ বেশি।

 মইনুল হাসান তাঁর হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তাঁর বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৪৩৩ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র বা নিজ নামে ব্যাংক আমানত থেকে ১ লাখ ২৯ হাজার ৮৩ টাকা ও শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শক ইত্যাদি খাত থেকে ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩৫০ টাকা। হলফনামায় তিনি স্থাবর সম্পদ দেখান ৮৫ লাখ ৭৮ হাজার ৪৭০ টাকার। এর মধ্যে ২০ লাখ টাকা মূল্যের কৃষিজমি ও নিজ নামে ৬৫ লাখ ৭৮ হাজার ৪৭০ টাকা মূল্যের তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া স্থাবর সম্পদ হিসেবে স্ত্রীর নামে ২০ লাখ টাকা মূল্যের একটি বাড়ি দেখান। 

মইনুল হাসানের অস্থাবর সম্পদ বেশি। তাঁর অস্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৩৯ লাখ ১০ হাজার ৭৭ টাকা। এর মধ্যে নিজ নামে নগদ ৬৮ লাখ ১৭ হাজার ১০৫ টাকা, ব্যাংকে জমা ২২ লাখ টাকা, নিজ নামে কোম্পানির শেয়ার ২ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ৪৪ লাখ ২২ হাজার ৯৭২ টাকা, মোটরগাড়ি ২ লাখ ১০ হাজার টাকা, অলংকার ২০ হাজার, ইলেকট্রনিকসসামগ্রী ২০ হাজার টাকা ও আসবাব ২০ হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে মইনুল হাসান সাদিক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো তথ্য গোপন রাখা হয়নি। হলফনামায় আমি সঠিক
তথ্য দিয়েছি।’

জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী মইনুল রাব্বী চৌধুরী। তিনি পলাশবাড়ী উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য। হলফনামা অনুযায়ী তাঁর ৬২ লাখ ৬০ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদ ৬০ লাখ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর অস্থাবরের চেয়ে স্থাবর সম্পদ বেশি। উপনির্বাচনে জাসদের প্রার্থী হয়েছেন এস এম খাদেমুল ইসলাম। হলফনামা অনুযায়ী তাঁর অস্থাবরের তুলনায় স্থাবর সম্পদ বেশি। তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ৭০ হাজার ৮০০ টাকা।