তিন বছরের মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করেছে মা

তিন বছরের মাহি (৩)। ছবি: সংগৃহীত
তিন বছরের মাহি (৩)। ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় তিন বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যার অভিযোগে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে শহরের হাজী সাহেব রোডের একটি বাসা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সন্তানকে গলা টিপে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ওই নারী।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা মাদক সেবন বা মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।

নিহত শিশুটির নাম মাহি (৩)। শিশুটির মায়ের নাম সুফিয়া বেগম। আর শিশুটির বাবার নাম মনু মিয়া বলে জানা গেছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে সুফিয়া ও মনুর বিচ্ছেদ হয়েছে বলে জানা যায়।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে হাজী সাহেব রোডের শাহানা বেগমের বাড়ির তিন তলায় শিশু মাহি ও স্বামীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন সুফিয়া বেগম। তিন-চার মাস ধরে সুফিয়া আর মেয়ে থাকেন। আজ বেলা ১টার দিকে সুফিয়া মেয়েকে অচেতন অবস্থায় দোতলায় নিয়ে আসে। আর বলতে থাকে বাড়িতে আগুন ধরেছে। এ সময় স্থানীয়রা ওই বাড়িতে গিয়ে শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান হাসপাতালের পৌঁছার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে ওই নারীর ঘরে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের ধারণা শিশুটিকে হত্যা করে ধামাচাপা দেওয়া বা আত্মহত্যার চেষ্টা করতে নিজেই ঘরের গ্যাসের সিলিন্ডারে আগুন দেয় ওই নারী।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুফিয়া বেগম জানিয়েছেন, সে ক্যানসারের রোগী। নিজে যখন-তখন মারা যাবেন। কন্যা সন্তানের দেখভালের কেউ নেই, তাই নিজেই গলা টিপে হত্যা করেছেন। তবে ওই নারী আসলেই ক্যানসারে আক্রান্ত কি না বা তাঁর মানসিক সমস্যা আছে কি না, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ওই নারী মাদক ব্যবসা ও সেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পুলিশের কাছে একই কথা জানিয়েছেন সুফিয়া বেগমের প্রথম স্বামীর ঘরের দুই মেয়ে। কলেজ পড়ুয়া ওই দুই মেয়ে জানান, তারা প্রাথমিকে পড়ার সময় সুফিয়া বেগমের সঙ্গে তার বাবার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর থেকে তারা বাবার সঙ্গে আলাদা থাকেন। তাঁদের ধারণা মাদক সেবনের কারণে শিশুটিকে হত্যা করেছে মা।

এ বিষয়ে মাগুরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আহসান হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশু সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ওই নারী। স্থানীয়দের কাছ থেকে তাঁর মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আর এ অভিযোগে থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্ত শেষে বাকি বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া যাবে’।