মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার চাইতে গিয়ে বিপাকে রাবি শিক্ষক

রয়টার্স প্রতীকী ছবি
রয়টার্স প্রতীকী ছবি

স্কুলপড়ুয়া মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার চাইতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী অধ্যাপক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেরও একটি বাড়তি দায়িত্বে ছিলেন। মেয়ের শ্লীলতাহানি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ও হাইকোর্টে রিট হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই প্রশাসনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত অক্টোবরে থানায় মামলা করেন ওই অধ্যাপক। গত ২০ অক্টোবর পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তারও করে। আসামি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের শিক্ষক। ওই স্কুলেই মেয়েটি পড়ত। দুই মাস জেল খেটে গত ১২ ডিসেম্বর তিনি জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর থেকে প্রতিদিনই বিদ্যালয়ে যাওয়া–আসা করতেন তিনি, তাঁকে বরখাস্তও করেনি কর্তৃপক্ষ। তাঁর উপস্থিতির কারণে মেয়েটির বিদ্যালয়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।

এ নিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘শ্লীলতাহানির শিকার মেয়েটি স্কুলে যেতে পারছে না, অভিযুক্ত শিক্ষক জামিনে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় প্রথম আলোতে। ওই সংবাদের সূত্র ধরে একজন আইনজীবীর করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপর ৫ মার্চ ওই শিক্ষককে বরখাস্তের কথা জানায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গতকাল ওই ছাত্রীর মাকে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

ওই ছাত্রীটির মায়ের অভিযোগ, তিন বছরের জন্য তিনি ওই দায়িত্বে নিযুক্ত হন। এখনো প্রায় দেড় বছর বাকি।

গতকাল ওই অধ্যাপক প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আবদুস সোবহান গতকাল তাঁকে নিজের দপ্তরে ডাকেন। সেখানে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়াও উপস্থিত ছিলেন। তাঁর মেয়ের শ্লীলতাহানি নিয়ে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশ ও হাইকোর্টে রিট হওয়ার জন্য তাঁকে দায়ী করেন উপাচার্য। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনবিরোধী কাজ করেছেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।

এ বিষয়ে উপাচার্য এম আবদুস সোবহান এবং সহ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। খুদে বার্তারও জবাব দেননি।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এম এ বারী বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আদেশক্রমে ওই অফিস আদেশ দিয়েছি। এর বাইরে কিছু বলতে পারব না।’