'জয় বাংলা' স্লোগান দিতে বিএনপি আর লজ্জা পাবে না: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, হাইকোর্ট ‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন। তাই এখন থেকে বিএনপি জয় বাংলা স্লোগান দিতে আর লজ্জা পাবে না।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।

আজ হাছান মাহমুদ বলেন, ‘হাইকোর্ট “জয় বাংলা”কে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা এ রায়কে স্বাগত জানাই। বিএনপিসহ যারা জয় বাংলা স্লোগান দিতে আগে লজ্জা পেত, আমি আশা করি তারা এখন আর জয় বাংলা স্লোগান দিতে লজ্জা পাবে না। তারা এখন থেকে জয় বাংলা স্লোগান দেবে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হাইকোর্ট আজ একটি রায় দিয়েছেন, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে গ্রহণের জন্য। সবাই যেন জয় বাংলা স্লোগান দেয়। এ রায়কে আমরা স্বাগত জানাই। এখন জয় বাংলা স্লোগান দিতে যাদের লজ্জা লাগে, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী বিএনপিসহ তাদের জয় বাংলা স্লোগান দেওয়া উচিত। দেশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান রেখে, সব ক্ষেত্রেই আমাদের স্লোগান ছিল জয় বাংলা। জয় বাংলা কোনো দলের স্লোগান নয়, জয় বাংলা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান।’

করোনাভাইরাস নিয়ে বিএনপি রাজনীতি শুরু করেছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির উচিত ছিল করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি না করে জনগণের পাশে দাঁড়ানো। এটি একটি বৈশ্বিক দুর্যোগ। এটি শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নয়, সমগ্র পৃথিবীব্যাপী দুর্যোগ।

হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পৃথিবীব্যাপী বিমান চলাচল সংকুচিত করা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে পারতপক্ষে বের হচ্ছেন না। এভাবে বিশ্বনেতারা তাঁদের কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করছেন। যাঁরা জনগণের জন্য রাজনীতি করেন, এই বৈশ্বিক দুর্যোগে তাঁদের উচিত জনগণের পাশে দাঁড়ানো।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি খোঁজা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা করোনাভাইরাস নিয়ে জনগণের সঙ্গে মশকরা করার শামিল।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সব সময় চিন্তিত-ব্যস্ত আছে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে। জনগণের জন্য যদি তারা রাজনীতি করে, দয়া করে করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করবেন না।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আবেদনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা জনগণের কথা ভাবে না বিধায় বিএনপির রাজনীতিটাও খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মধ্যে আটকে আছে। বেগম জিয়ার স্বজনেরাও তাঁকে নিয়েই চিন্তা করছেন, অন্য কাউকে নিয়ে চিন্তা করছেন না।

এ সময়ে তথ্যমন্ত্রী বৈশ্বিক এই দুর্যোগ মোকাবিলায় দলমত–নির্বিশেষে দেশের জনগণের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য দেশবাসীর পক্ষ থেকে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে সেই প্রোগ্রামগুলো সংকুচিত করেছেন। কোনো প্রোগ্রাম বাতিল করা হয়নি। বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে এবং বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এই প্রোগ্রামগুলোকে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্বনেতারা মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সম্মতি দিয়েছিলেন এবং নিশ্চিত করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর নিশ্চিত করে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। যেদিন মুজিব বর্ষ উদযাপনে জাতীয় কমিটি বেশি জনসমাগম হওয়া অনুষ্ঠান আপাতত পরিহার করা হলো, সেদিনও ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে মোদির সফর নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছিল।
করোনাভাইরান নিয়ে কোনো ধরনের আতঙ্ক না ছাড়াতে মিডিয়াগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কিছু পত্রিকা করোনা নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আতঙ্ক ছড়ানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। করোনা মোকাবিলায় সরকার বহু আগে থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বিদেশ থেকে যাঁরা আসছিলেন এবং আসছেন, সবাইকে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে হয়েছে।
মাস্ক-হ্যান্ডওয়াশের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে একটি অসাধু ব্যবসায়ী মহল মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। নানা ধরনের ক্লিনিক্যাল ম্যাটারিয়ালসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে দৃষ্টি রাখছে। যারা এই কাজগুলো করবে, সরকার তাদের বিরুদ্ধে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ সময়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্কুল–কলেজ বন্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।