রাস্তার ইট তুলে বাড়িতে নিলেন চেয়ারম্যান

রাস্তার ইট তুলে রাখা হয়েছে মহেশপুরের মান্দারবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে। গত সোমবার তোলা।  ছবি: প্রথম আলো
রাস্তার ইট তুলে রাখা হয়েছে মহেশপুরের মান্দারবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে। গত সোমবার তোলা। ছবি: প্রথম আলো

নতুন করে রাস্তায় ইটের কাজ হচ্ছে, তাই পুরোনো ইট তুলে বাড়িতে নিয়ে গেলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিদুল ইসলাম। তিন শ ফুট গ্রামীণ রাস্তায় আগে ইট বিছানো ছিল, আর এখন করা হচ্ছে এইচবিবি (হেরিং)। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের শংকরহুদা গ্রামের। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, শংকরহুদা গ্রামের মধ্যে বেশ কয়েকটি রাস্তা রয়েছে। যার কিছু আছে পিচঢালা, আবার কিছু আছে ইট বিছানো। তেমনই একটি রাস্তা শংকরহুদা রনজু বিশ্বাসের বাড়ি থেকে জামাল হোসেনের বাড়ি পর্যন্ত। এই রাস্তায় দুই বছর আগে স্থানীয় সরকার বিভাগের এলজিএসপির অর্থায়নে তিন শ ফুট ইট বিছানোর কাজ করা হয়। যাকে স্থানীয়ভাবে সলিং বলে। সেই রাস্তায় এবার ৫২ লাখ ১১ হাজার ৪১৫ টাকা ব্যয় করে ১ হাজার মিটার এইচবিবি (হেরিং) করার কাজ করছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। ইতিমধ্যে তারা রাস্তাটির কাজ শুরু করেছে। 

এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস ইটের রাস্তায় এইচবিবি করছে এমন খবর পেয়ে রাস্তার পুরোনো ইট তুলে নেন মান্দারবাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান শফিদুল ইসলাম। তিনি শ্রমিক নিয়োগ করে সব ইট তুলে তাঁর বাড়িতে রেখেছেন। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, ইটগুলো কোন উদ্দেশ্যে তাঁর বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়েছে, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। তবে সরকারি ইট এভাবে বাড়িতে রাখা যায় না। এ ছাড়া শেষ পর্যন্ত ইটের সঠিক হিসাবও থাকবে না বলে জানান স্থানীয় ব্যক্তিরা। 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেরুন নেছা জানান, তাঁরা প্রকল্প নিয়ে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচন করে কাজ করতে যান। রাস্তায় যে পুরোনো ইট ছিল, সেগুলো চেয়ারম্যান সরিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু ইটগুলো কোথায় রেখেছেন, সেটা তাঁর (মেহেরুন) জানা নেই। 

শফিদুল ইসলাম বলেন, ইট তিনি বাড়িতে নিয়ে রেখেছেন। এই ইট অন্য একটি রাস্তায় ব্যবহার করা হবে। ইটগুলো নষ্ট না করে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কত ইট তোলা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই হিসাব তিনি করেননি। রাস্তায় যে ইট পেয়েছেন, সেগুলো তুলে রেখেছেন। 

মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন সরকার জানান, রাস্তার কিছু ইট তুলে ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়েছে এমনটি তিনি জানতেন, কিন্তু বাড়িতে রাখা হয়েছে, এটা তাঁর জানা নেই।