পাপিয়া-কাণ্ডে কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ সমীচীন নয়: তথ্যমন্ত্রী

হাছান মাহমুদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
হাছান মাহমুদ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

সত্যতা যাচাই না করে কোনো সংবাদমাধ্যমে কোনো ধরনের কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ করা কোনোভাবেই সমীচীন নয় বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

সম্প্রতি অস্ত্র, মাদক ও জাল টাকার পৃথক তিন মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর ওরফে পাপিয়ার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক মানবজমিন। এর জের ধরে পত্রিকাটির সম্পাদকসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাগুরা-১ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার মামলা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কিছু কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আমি মনে করি, সত্যতা যাচাই না করে এ ধরনের কাল্পনিক তালিকা প্রকাশ কোনোভাবেই সমীচীন নয়। যদি কেউ করে থাকে, সেটি পত্রিকা হোক, অনলাইনে হোক বা অন্যভাবে হোক সেটার দায় তারা এড়াতে পারেন না।’

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাশেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কেউ সংক্ষুব্ধ হলে দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেই পারেন। সেটি তার সাংবিধানিক অধিকার। এবং যাচাই বাছাই না করে দায়িত্বশীল পত্রিকা কিংবা কোনো দায়িত্বশীল অনলাইন, কিংবা দায়িত্বশীল কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ করা কোনোভাবেই দায়িত্বশীলতার মধ্যে পড়ে না। সুতরাং এই দায়িত্বহীন আচরণ যদি কেউ করে থাকেন, দায়িত্বহীনতার দায় তাকে নিতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিবকে একটু পড়াশোনার জন্য তথ্যমন্ত্রীর অনুরোধ

‘বিএনপি করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারকে দোষারোপ করছে’-এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির কাজ হচ্ছে সমালোচনা করা। বিএনপি এই করোনাভাইরাস নিয়ে জনগণের জন্য কি করেছে? তারা শুধুমাত্র ভুল খুঁজে বেড়ানোর রাজনীতিটা করছেন। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব, এ ব্যাপারে একটু পড়াশোনা করার জন্য। কারণ করোনাভাইরাসে আক্রান্তকে সাথে সাথে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। সংক্রমিত হওয়ার ১৫ দিন পরে তার দেহে করোনাভাইরাস আছে কি-না সেটি নির্ণয় সম্ভব হয়। সুতরাং বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দরে সমস্ত ব্যবস্থা নেয়া সত্ত্বেও বিদেশ থেকে আসা বাঙালিরা স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করলেও সাথে সাথে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, পরবর্তীতে তাদের দেহে সেটি পাওয়া গেছে, যেটি অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে ঘটেছে।’

‘পোড় খাওয়া নেতা কর্মীরাই দলের নেতৃত্বে থাকবেন’

দলের পোড় খাওয়া নেতা কর্মীরাই দলের নেতৃত্বে থাকবেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, সবাই এ দল করতে পারে, সমর্থন করতে পারে, কিন্তু সবাই এই দলের নেতৃত্বে আসতে পারে না। নেতৃত্বে তারাই আসবেন, যারা দল এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্থাশীল। যারা দলের সুসময় এবং দুঃসময় সব সময়ে দলের জন্য অবিচল কাজ করবে এবং একই সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল থেকে কাজ করবে, তারাই দলীয় নেতৃত্বে থাকবেন। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকও বারংবার বলেছেন, যারা মাদক বা জমি দখলের সাথে যুক্ত, যারা চাঁদাবাজ তারা নেতৃত্বে থাকবে না।’

হাছান মাহমুদ জানান, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মার্চ মাসে আর সম্মেলন করা হবে না। এপ্রিল মাসের শেষের দিকে রমজান শুরু হবে বলে এপ্রিলেও ব্যাপক জনসমাবেশ করে সম্মেলন পরিহার করা হবে। তবে দলের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আর কয়েক দিন পরেই জাতির পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ১৭ মার্চ। এ উপলক্ষে জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে সমস্ত জনসমাগম সম্পৃক্ত কর্মসূচিগুলো আপাতত স্থগিত করেছেন। কোনো কর্মসূচি বাতিল করা হয় নাই। আমরা পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছি। জনসমাগম হবে এমন দলীয় কর্মসূচিগুলোও আমরা স্থগিত করেছি, পরবর্তীতে এগুলো সুবিধাজনক সময়ে পালিত হবে।’