রংপুর মেডিকেলে এমআরআই-সিটি স্ক্যান অচল

সচল না থাকায় এমআরআই যন্ত্র কোনো কাজে লাগছে না। গতকালের ছবি।  প্রথম আলো
সচল না থাকায় এমআরআই যন্ত্র কোনো কাজে লাগছে না। গতকালের ছবি। প্রথম আলো

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেডিওলোজি ও ইমাজিং বিভাগে রোগনির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি যন্ত্র সিটি স্ক্যান ও ম্যাগনেটিক রিসোনেস ইমাজিং (এমআরআই) এক বছর ধরে নষ্ট। এর ফলে রোগীদের হাসপাতালের বাইরে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে হচ্ছে, যাতে প্রায় দ্বিগুণ খরচ লাগছে।

রেডিওলোজি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এমআরআই যন্ত্রটি গত বছরের ৩ এপ্রিল এবং সিটি স্ক্যান যন্ত্রটি গত বছরের ২৮ মার্চ থেকে অচল হয়ে আছে। এ বিভাগের প্রধান নাজমুন নাহার বলেন, এই যন্ত্র দুটি মেরামত করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দুই মাস পরপর চিঠি দেওয়া হয়েছে। মৌখিকভাবে অনেকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো উদ্যোগই নেই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুতের ভোল্টেজ ওঠানামার কারণে সিটি স্ক্যান যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে। ওই কক্ষের এসিও নষ্ট। একই কারণে এমআরআই যন্ত্রটিও বন্ধ রয়েছে। এই যন্ত্র দুটি চালু থাকলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ জন রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হতো। কিন্তু এখন দ্বিগুণ টাকা খরচ করে রোগীদের হাসপাতালের বাইরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এমআরআই যন্ত্রের মাধ্যমে মানবদেহের এক্স–রে জাতীয় সব ধরনের রোগ নির্ণয় করা হয়। সাধারণত মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের রোগ নির্ণয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। এমআরআই যন্ত্রে হাসপাতালে খরচ পড়ে ৩ হাজার টাকা। আর বাইরে থেকে তা পরীক্ষায় ব্যয় হয় প্রায় ৬ হাজার টাকা।

আর সিটি স্ক্যান যন্ত্রে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হাসপাতালে খরচ পড়ে সর্বনিম্ন¤২ হাজার টাকা। আর বাইরে খরচ পড়ে ৪–৫ হাজার টাকা।

গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, এক ঘণ্টায় ১০ জন রোগীর স্বজন খোঁজ নিতে এসেছেন যন্ত্র দুটি সচল হয়েছে কি না। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর এলাকার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘প্রায়ই খোঁজখবর নিই যে, এমআরআই যন্ত্রটি ভালো হলো কি না। কিন্তু এত দিন ধরে যে এত বড় একটি হাসপাতালে যন্ত্র ভালো হচ্ছে না, তা ভাবতে অবাকই লাগে।’

নীলফামারীর জলঢাকা থেকে রোগীর এক স্বজন রবিউল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের এই যন্ত্র কবে যে ঠিক হবে? বাইরে থেকে প্রায় ৬ হাজার টাকা দিয়ে এমআরআই টেস্ট করালাম।’

এই বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন টেকনোলজিস্ট প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে রোগী আসছে। কিন্তু দুটি যন্ত্র খারাপ থাকায় তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের পরিচালক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালের এসব যন্ত্র ঠিক করার জন্য স্থানীয়ভাবে আমাদের করার কিছু নেই। ঢাকায় ন্যাশনাল ইলেকট্রো-মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিউ) নামের প্রতিষ্ঠান যন্ত্রগুলো ঠিকঠাক করে থাকে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখব।’