খুদে কবিদের চাঞ্চল্যভরা আয়োজন

‘ভিশন ২০২১ নীলফামারী’ আয়োজিত খুদে কবিদের ছড়া ও কবিতা লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনা। গতকাল নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশ।  ছবি: প্রথম আলো
‘ভিশন ২০২১ নীলফামারী’ আয়োজিত খুদে কবিদের ছড়া ও কবিতা লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনা। গতকাল নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশ। ছবি: প্রথম আলো

সকাল ১০টা বাজার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ নীলফামারী শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর। প্রায় ১৫ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতার এ চত্বরে তখনো দলে দলে আসছিলেন জেলার সব প্রান্তের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এই ঢল ছিল খুদে কবিদের এক অনন্য আয়োজনকে ঘিরে। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা তাদের পদচারণে পুরো স্থান হয়ে উঠেছিল খুদে কবিদের এক মিলনমেলা।

গতকাল রোববার এ আনন্দ আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিল শিশু কবিদের ছড়া ও কবিতা লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা অতিথিরাও অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হন। তাঁরা বেলুন উড়িয়ে এ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এর আগে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

উদ্বোধন শেষে শুরু হয় নৃত্য, ছড়া, কবিতা ও গান। ছড়ার ছন্দে বক্তব্য দেন শিশুসাহিত্যিক আলম তালুকদার। অভিনয় ও সংগীত পরিবেশন করেন অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী, শাহনাজ খুশি ও তাঁর দুই ছেলে। জাদু দেখান এম ডি মনোয়ার হোসেন।

নীলফামারীতে এ বছর ছড়া ও কবিতা লেখা প্রতিযোগিতায় ৩১ হাজার ৮০০টি ছড়া ও কবিতা জমা পড়ে। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে, উপস্থিত শিক্ষার্থীদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘শুধু সংখ্যা বাড়লে হবে না, এটির নিয়মিত চর্চা করতে হবে, কবিতা–গল্প–ভ্রমণকাহিনি পড়তে হবে, গোয়েন্দা কাহিনিতেও আপত্তি নেই। অ্যাডভেঞ্চার কাহিনি পড়ো, সব ঠিক আছে। ক্লাসের বইয়ের পাশাপাশি এসব না পড়লে লেখক হওয়া দূরের কথা, মানুষও হওয়া যাবে না।’

শিশুসাহিত্যিক আখতার হুসেন বলেন, ‘আমি দিনটির জন্য গভীরভাবে অপেক্ষা করি। আপনাদের পাঠানো লেখা বাছাই করতে গিয়ে আমরা যে কী পরিমাণ আলোড়িত হই, সেটা কল্পনাতীত ব্যাপার।’

অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা সংগঠন ‘ভিশন ২০২১ নীলফামারী’–এর প্রধান সমন্বয়ক ওয়াদুদ রহমান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘৪৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে। বিচারকমণ্ডলীর বাছাই করা ৫০০ লেখা দিয়ে বের করা হয়েছে বই আমরা করবো জয়।’ অনুষ্ঠানের শেষ দিকে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।

আইডিএলসির এমডি আরিফ খান এ আয়োজনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা জানান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি, পাঞ্জেরি প্রকাশনের নির্বাহী কর্মকর্তা জব্বার আল নাঈম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, শিশুসাহিত্যিক রমজান মাহমুদ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ। উপস্থিত ছিলেন নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান। পরে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে বিএসআরএম, ঢাকা ব্যাংক, আইডিএলসি, স্কয়ার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও আইএফআইসি ব্যাংক।