বুয়েটছাত্র আবরার হত্যা মামলা দ্রুত বিচারে

আবরার ফাহাদ। ফাইল ছবি
আবরার ফাহাদ। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আইন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন হয়েছে। এই সংক্রান্ত নথিতে আজ বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী স্বাক্ষর করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট প্রকাশিত হবে।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর জন্য ঢাকার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদন করেন তার বাবা বরকত উল্লাহ। সেদিনই তিনি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে বিচারককে বলেছিলেন, তার ছেলের হত্যা মামলাটির বিচার যেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হয়। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ২২ জন বুয়েটছাত্রকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এই মামলায় পলাতক রয়েছেন তিন আসামি। গত ২১ জানুয়ারি এই হত্যা মামলায় ২৫ বুয়েটছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন আদালত। গত বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গত বছরের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, পরস্পর যোগসাজশে পরস্পরের সহায়তায় শিবির সন্দেহে আবরারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। ক্রিকেট স্টাম্প, মোটা দড়ি দিয়ে নির্যাতন করার একপর্যায়ে আবরার ফাহাদ বমি ও প্রস্রাব করে ফেলেন। এরপর তাঁকে হলের বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। বদলানো হয় তাঁর জামা-কাপড়।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আসামি মিজানের দেওয়া আবরারের বিরুদ্ধে শিবির করার ‘তথ্যের’ ভিত্তিতে তাঁকে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আবরার ফাহাদকে ২০০৫ নম্বর কক্ষে নেওয়ার পর আসামি ইফতি মোশাররফ অন্যদের বলেন, ‘তোরা এবার আবরারের কাছ থেকে তথ্য বের কর। বুয়েটে কে কে শিবির করে।’ তখন আসামি মোয়াজ আবু হোরায়রা ও অমর্ত্য ইসলাম আবরারের মুমূর্ষু অবস্থা দেখে আসামি মেহেদি হাসান ওরফে রবিনকে জানান, ‘আবরারকে হাসপাতালে নিতে হবে।’ এই কথা শোনার পর মেহেদি হাসান ওরফে রবিন বলেন, ‘ও নাটক করছে। শিবির চেনস না। শিবির চেনা কষ্ট।’ রাত আড়াইটার সময় আসামি ইফতি মোশাররফ, মুজাহিদ, তাবাখখারুল ও তোহা মিলে আবরারকে তোশকে করে হলের দোতালার সিঁড়িতে রাখেন। এরপর আসামিরা বুয়েটের চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনেন। চিকিৎসক আবরারের দেহ পরীক্ষা করে ঘোষণা দেন, তিনি মারা গেছেন।