নির্দলীয় কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রচারণা

কাউন্সিলর প্রার্থীরা ব্যানারে লিখছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। গতকাল বেলা একটায় কাজীর দেউড়ি এলাকায়।  প্রথম আলো
কাউন্সিলর প্রার্থীরা ব্যানারে লিখছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। গতকাল বেলা একটায় কাজীর দেউড়ি এলাকায়। প্রথম আলো

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধির ছিটেফোঁটাও মানছেন না প্রার্থীরা। ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচন নির্দলীয় হলেও অনেক প্রার্থী পোস্টার–ব্যানারে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন। এই তালিকায় বেশির ভাগই সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ পোস্টারে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ছবিও দিয়েছেন। 

এই ধরনের প্রচারণা নির্বাচনী বিধির পুরোপুরি পরিপন্থী। তারপরও কেউ এটাতে গা করছেন না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মতে, এই প্রথম চট্টগ্রামে মেয়র পদে নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নির্বাচন সম্পূর্ণ নির্দলীয়। তবে দলীয়ভাবে কাউকে সমর্থন দিলেও প্রচারণায় কাগজে-কলমে তার কিছু থাকতে পারবে না। 

সেই অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাদের সমর্থিত প্রার্থী নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রার্থীরাও নির্দলীয় হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু প্রচারণা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের বড় ঘটনা।

রামপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সবুর, পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী কফিল উদ্দিন খান, এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের সলিম উল্লাহ, জামালখানের শৈবাল দাশ, শুলকবহরের মোরশেদ আলম, বাগমনিরামের গিয়াস উদ্দিন, লালখান বাজার ওয়ার্ডের আবুল হাসনাতসহ আরও অনেকে তাঁদের পোস্টার ও ব্যানারে নিজেকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী’ হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।

রামপুর ওয়ার্ডের আবদুস সবুর ও গিয়াস উদ্দিন এক কাঠি সরস। তাঁরা নিজেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী লেখার পাশাপাশি ব্যানারে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ছবিও দিয়েছেন। 

রামপুর ওয়ার্ডে এবার আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে আবদুস সবুরকে সমর্থন দেয়। ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এরশাদ উল্লাহও দলের সমর্থন চেয়ে ব্যর্থ হন। তবে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। 

এ নিয়ে এরশাদ উল্লাহ এর মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্দলীয় নির্বাচনে দলীয় প্রধানের ছবি দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এক প্রার্থী। আমি অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু এখনো ব্যানার রয়ে গেছে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনির হোসাইন খান প্রথম আলোকে বলেন, কিছু কিছু কাউন্সিলর দলীয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে নজরে এসেছে। তাঁদের ডেকে পোস্টার নামিয়ে ফেলতে বলা হবে। তাও যদি না করেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু সাধারণ নয়, নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নিজেদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জেসমিন পারভিন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তসলিমা বেগম ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নীলু নাগ নিজেদের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বলে পোস্টার ও ব্যানার টানিয়েছেন। 

এ ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, দল মনোনয়ন নয় সমর্থন দিয়েছে। তাঁরা নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানারে দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে আচরণবিধি ভঙ্গ হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন।