থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা আছে, তবে তা অনেক ব্যয়বহুল

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ১৩ মার্চ। ছবি: আহমেদ দীপ্ত
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ১৩ মার্চ। ছবি: আহমেদ দীপ্ত

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা আছে, তবে তা অনেক ব্যয়বহুল। রোগীদের প্রতিমাসে এক থেকে দুই ব্যাগ রক্ত লাগে। সহজলভ্য কোনো চিকিৎসা না থাকায় এই রোগ প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই। এর জন্য বিয়ে করার আগে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করানো উচিত।

আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচতেনতা সৃষ্টির লক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন।

মূল প্রবন্ধ পাঠকালে মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এছাড়া মুজিববর্ষে বছরব্যাপী সচেতনতা কার্যক্রম পালন করা হবে।

দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা কত তা নিয়ে সরকারি কোনো তথ্য বা হিসাব নেই। অনুষ্ঠান থেকে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭ শতাংশ অর্থাৎ ১ কোটি দশ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। এই বিপুল সংখ্যক থ্যালাসেমিয়া বাহক পরস্পরের বিয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর নতুন করে সাত হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে দুই বাহকের মধ্যে বিয়ে রোধ করা গেলে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। এর জন্য সচেতনতাও বাড়ানো প্রয়োজন। আর দরকার এই রোগ প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগ।

অনুষ্ঠানে রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মনজুর মোরশেদ বলেন, এ দেশে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে অপ্রতুলতা আছে। ওষুধের অপ্রতুলতার কারণে বিদেশি ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয় এবং তা অনেক ব্যয়বহুলও। এটা একটা অদ্ভুত রক্তের রোগ, যতদিন বেঁচে থাকেন অনেক কষ্ট নিয়ে বাঁচেন।

থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে জনগণের সচতেনতার কোনো বিকল্প নেই বলে জানান বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক ও সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ। তিনি বলেন, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে এই রোগের নিরাময় সম্ভব। কিন্তু তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে রক্ত কমে যায়, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।

মুজিব বর্ষে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনে পক্ষ থেকে থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হবে। ফাউন্ডেশনের দাবি, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে থ্যালাসেমিয়া দিবস ঘোষণার। এ ছাড়া চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ এর ২৬ মার্চ পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। এর মধ্যে রয়েছে জেলা পর্যায়ে কর্মসূচি, মন্ত্রণালয়, বিভাগে প্রচার চালানো, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল স্থাপন, আন্তর্জাতিক কনফারেন্স ও কর্মশালার আয়োজন করা।