সুন্দরী ও গোলপাতা এখন টবেই হচ্ছে

বাড়িতে সুন্দরীগাছের পরিচর্যা করছেন মাহবুব ইসলাম।  ছবি: প্রথম আলো
বাড়িতে সুন্দরীগাছের পরিচর্যা করছেন মাহবুব ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো

সাধারণত সুন্দরবনের গাছ দেশের অন্য অঞ্চলে হয় না, এমন ধারণাই প্রচলিত ছিল। বেশ আগেই সেই ধারণা ভেঙে নিজ বাড়িতে সুন্দরবনের দুর্লভ গাছের বাগান তৈরি করেছেন বৃক্ষপ্রেমী মাহবুব ইসলাম (৩০)। এবার তিনি সুন্দরবনের গোলপাতা টবে চাষ শুরু করেছেন। বাগান থেকে এই গোলপাতা তিনি ঘরের বারান্দায় তুলে এনেছেন। আর শুধু গোলপাতাই নয়, এই তালিকায় যুক্ত করেছেন সুন্দরবনের সুন্দরীগাছও।

মাহবুব ইসলামের লক্ষ্য একটাই, অন্যদের দুর্লভ কিছু উপহার দেবেন। তা হতে পারে একটি সুন্দরীগাছ অথবা একটি গোলপাতা। মাহবুবের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের বাজারভদ্রঘাট শেখপাড়া গ্রামে। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। কর্মসূত্রে থাকেন রাজশাহী শহরে। এখানেই তিনি টবে সুন্দরী ও গোলপাতার গাছ লাগিয়েছেন।

সচরাচর লোকালয়ে দেখা যায় না এমন ৪৫ প্রজাতির গাছ রয়েছে মাহবুবের বাড়ির বাগানে। সব মিলিয়ে তাঁর বাগানে ২০০ প্রজাতির গাছ বেড়ে উঠছে। ১৭ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজ গ্রামে তিনি এই বাগান তৈরি করেছেন। গত বছরের ৬ জুলাইয়ে প্রথম আলোয় ‘দুর্লভ বৃক্ষের সংগ্রহ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর দুর্লভ গাছের গল্প। অনেকেই তাঁর কাছে দুর্লভ গাছের চারা নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর মাহবুবের কাছ থেকে দুর্লভ গাছের চারা নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান। গত ২৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য মাহবুব ইসলাম রাজশাহী কলেজে ১৩ প্রজাতির ২৩টি গাছ উপহার দেন। খবর পেয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন তাঁর কাছ থেকে গাছ চেয়ে পাঠান। মাহবুব গত ১৬ অক্টোবর মেয়রকে ৩০টি দুর্লভ প্রজাতির গাছ উপহার দেন। প্রথম আলোর রাজশাহী বন্ধুসভাকে ৩০০ গাছ উপহার দেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মাহবুব তাদের পাঁচটি অতি দুর্লভ গাছ উপহার দেন।

এখন প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ গাছের জন্য লোকজন মাহবুবের কাছে আসেন। তিনিও সাধ্যমতো গাছ উপহার দেন।