নরসুন্দা নদীর বুকে এখন বোরোর আবাদ

শুকিয়ে গেছে নরসুন্দা। এর ধারা তিরতির করে বইছে। দুই পাশে আবাদ করা হয়েছে বোরো ধান। গত শুক্রবার কিশোরগঞ্জের নান্দাইলে সওজ সেতু এলাকায়।
শুকিয়ে গেছে নরসুন্দা। এর ধারা তিরতির করে বইছে। দুই পাশে আবাদ করা হয়েছে বোরো ধান। গত শুক্রবার কিশোরগঞ্জের নান্দাইলে সওজ সেতু এলাকায়।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদী। শুকিয়ে গেছে। তিরতির করে বইছে একটি শীর্ণ ধারা। এর দুই পাশে কৃষকেরা আবাদ করেছেন বোরো ধান। চারাগুলো সবুজ। দূর থেকে সবুজ গালিচার মতো দেখায়।

বর্ষায় নদীটি জলে ভরে ওঠে। তখন স্রোত থাকে। তখন পলি জমে নরসুন্দার তলদেশে। সেখানেই ফলে বোরো ধান। মাটি খুবই উর্বর। এ কারণে উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে। ধানের ফলনও হয় ভালো। এতে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখেন। এতে তাঁরা বেশ খুশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নরসুন্দা নদীটি নান্দাইল উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কিশোরগঞ্জ শহর হয়ে ভাটি অঞ্চলে গিয়ে মিশেছে। নদীটি মূলত পুরোনো বহ্মপুত্র নদের একটি শাখা।

>* নদীটি নান্দাইল উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
* কিশোরগঞ্জ শহর হয়ে ভাটি অঞ্চলে গিয়ে মিশেছে।
* নদীটি মূলত পুরোনো বহ্মপুত্র নদের একটি শাখা নদী। যদিও পরে এর নাম হয় নরসুন্দা।
* বর্ষায় নদীটি জলে ভরে ওঠে। তখন স্রোত থাকে। তখন পলি জমে নরসুন্দার তলদেশে।
* সেখানেই ফলে বোরো ধান। মাটি খুবই উর্বর। এ কারণে উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে।
* ধানের ফলনও হয় ভালো। এতে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখেন।

স্থানীয় কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, মাছ শিকারের জন্য একসময় এই নরসুন্দা নদীর বিভিন্ন অংশে বাঁধ দেওয়া হতো। বছর বছর বাঁধের সংখ্যা বেড়ে চলে। অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দেওয়ার ফলে নদী ভরাট হয়ে যেতে থাকে। এ ছাড়া দখলে ও দূষণের কারণেও নদীর নাব্যতা কমতে থাকে। নদীটি মরে যেতে থাকে। নৌচলাচলও সীমিত হয়ে পড়ে। শুষ্ক মৌসুমে নদীটি পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। একটা শীর্ণ ধারা বয়ে যায়। জানান দেয় এটি নদী। তবে বর্ষা মৌসুমে নদীটি ভরে ওঠে। তখন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা থেকে পাথরবোঝাই নৌকা আসে নান্দাইলের তারঘাট বাজার পর্যন্ত। নৌচলাচল বলতে এটুকুই। বর্ষাকাল শেষ হয়। এরপর শুরু হয় মাছ শিকারের পালা। সেই পালা শেষ হয়। শুকনা নদীর বুকে শুরু হয় ধান চাষের প্রস্তুতি।

 জাহাঙ্গীরপুর, শেরপুর ও খারুয়া ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক বলেন, নরসুন্দার বুকে আগাম জাতের ধান আবাদ করা হয়। অনেকটা হাওরাঞ্চলে বোরো মৌসুমের ধান আবাদের মতো। বৃষ্টির পানিতে নদী ভরে যাওয়ার আগেই ফসল ঘরে তোলা হয়। এ ছাড়া নদীর জমিতে ধান আবাদে সার ও কীটনাশক দিতে হয় না। নদীর সরু অংশে যেটুকু পানি থাকে, প্রয়োজনে সেচ দেওয়া যায়। এ কারণে উৎপাদন খরচ কম হয়। আর কৃষকের গোলা ভরে ওঠে ধানে।

নরসুন্দা নদীতে কী পরিমাণ ধান আবাদ করা হয়, এ সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই কৃষকদের কাছে। এমনকি স্থানীয় কৃষি অফিসে খোঁজ নিয়েও এ–সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।