গাজীপুরে কোয়ারেন্টিনে থাকা ইতালিফেরতদের বিক্ষোভ, চারজনকে ঢাকায় প্রেরণ

গাজীপুরে কোয়ারেন্টিনে থাকা ইতালিফেরত ব্যক্তিরা বিক্ষোভ করেছেন। একপর্যায়ে ফটকের তালা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। পরে তাঁদের বুঝিয়ে ভেতরে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে চারজনকে ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোববার বিকেলের দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ইতালিফেরত ৪৮ জনকে শনিবার রাতে গাজীপুরের একটি হাসপাতালে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়। রোববার বিকেলে তারা সেখান থেকে মুক্ত হতে বিক্ষোভ করে কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে হাসপাতালের চত্বরে বেরিয়ে আসেন।

গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল জাকী বলেন, মেঘডুবি হাসপাতালে থাকা প্রবাসীরা বলেন, তারা বিদেশ থেকে দেশের জন্য অনেক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে থাকেন। তাদের কেন আটকে রাখা হলো। তাদের কী অপরাধ? এসব বলে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে ওই হাসপাতালের ভেতরের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে হাসপাতাল চত্বরে বের হয়ে পড়েন। সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে তাদের অনেক বুঝিয়ে ভেতরে নেওয়া হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সেখানে একজন মেডিকেল অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের চারজনের দেহে জ্বর অনুভূত হওয়ায় রাজধানীর উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানিও সরবরাহ করা হচ্ছে।

ইউএনও আবদুল্লাহ আল জাকী বলেন, এখানে ৭০ জনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার মধ্যরাতে ৪৮ জনকে গাজীপুরের এ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে তাদের মশারি ও কয়েল সরবরাহ করা হয়। সেখানে প্রতি কক্ষে ৩ / ৪ ফুট গ্যাপ দিয়ে ১০ জন থেকে ১৬ জন করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া একটি কক্ষে এক প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে আলাদা করে রাখা হয়েছে।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. খায়রুজ্জামান জানান, এখান থাকা ইতালিপ্রবাসীরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন। তাদের বিষয়ে তারা দ্রুত সিদ্ধান্ত চান। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে তাদের কিছু করার নেই। তিনি বলেন, হাসপাতালে রেখে তাদের করোনা সংক্রমণের আলামত আছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সচেতনতামূলক পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। চারজনের দেহে জ্বর থাকায় অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাদের ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা এখনো ভালো আছে। তাদের আর কোনো সমস্যা নেই।

স্থানীয় থানার ওসি জানান, বিক্ষোভের খবর পেয়ে সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার পর এখন হাসপাতালের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।