কর্মস্থলে যেভাবে করোনা ঠেকাতে বলছে ডব্লিউএইচও

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে কর্মস্থলে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, কর্মীদেরই–বা করণীয় কী, সে সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রথমেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারীদের (নিয়োগদাতা) করণীয় কী, সে সম্পর্কে বলেছে ডব্লিউএইচও।

কর্মদিবস কমিয়ে আনার কথা ভাবতে বলেছে ডব্লিউএইচও। কর্মস্থল পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জোর দিয়েছে তারা। বিশেষ করে ডেস্ক, টেবিল, টেলিফোন, কি–বোর্ড ইত্যাদি জীবাণুনাশক দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর কারণ, ভাইরাস রয়েছে এমন স্থান ও সামগ্রীর স্পর্শে আসা কর্মীর মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কর্মীদের পাশাপাশি অফিসে আসা অন্য ব্যক্তিদের ভালোভাবে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে বলেছে ডব্লিউএইচও। এ কাজটি করার জন্য কর্মীদের উৎসাহিত করতে হবে। অফিসের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মজুত রাখতে হবে জীবাণুনাশক ও হাত ধোয়ার সামগ্রী। এ ছাড়া করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হাত ধোয়াসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধির পোস্টার প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে মাস্ক ও টিস্যু পেপারের সহজলভ্যতার বিষয়টিও।

অফিসে আসার পথে সরকারের ভ্রমণ পরামর্শ মেনে চলার জন্য কর্মীদের পরামর্শ দিতে হবে। কর্মী যে এলাকায় থাকেন, সেখানে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে তিনি যেন বাড়িতেই অবস্থান করেন, সে বিষয়ে পরামর্শ দিতে হবে।

ঝুঁকি কমাতে যা প্রয়োজন

খুবই জরুরি না হলে অফিসে বৈঠকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়টি ভাবতে হবে। বৈঠক বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী কোনো ব্যক্তি হয়তো নিজের অজান্তেই করোনাভাইরাস বয়ে আনতে পারেন। মুখোমুখি বৈঠক এড়িয়ে টেলিফোন কনফারেন্স বা অনলাইনে তা করা যায় কি না, সেটি বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৈঠকে উপস্থিত কেউ শুষ্ক কাশি, জ্বর, অসুস্থতা বোধ করলে তাঁর বিষয়ে দ্রুত (হাসপাতালে পাঠানো বা বাসায় রাখা) সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

>

কর্মদিবস কমিয়ে আনতে হবে
মুখোমুখি বৈঠক এড়িয়ে টেলিফোন কনফারেন্স বা অনলাইনে করা যেতে পারে
ডেস্ক, টেবিল, টেলিফোন, কিবোর্ড ইত্যাদি জীবাণুনাশক দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে
১ মিটার বা ৩ ফুটের কিছু বেশি রাখতে হবে

বৈঠক বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সবার নাম ও যোগাযোগের ঠিকানা অন্তত এক মাসের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। এর ফলে বৈঠক বা অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর যদি শোনা যায় কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে ওই বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ঝুঁকিতে থাকা অন্যদের শনাক্ত করতে সুবিধা হবে।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

ঝুঁকি এড়াতে কর্মীদের করোনাভাইরাস সংক্রমিত এলাকায় যাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। ভ্রমণের সময় সঙ্গে জীবাণুনাশক রাখতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়া ব্যক্তিদের থেকে অন্তত এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া এলাকা থেকে আসার পর কর্মীদের ১৪ দিনের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। এমনকি সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখা দিলেও কর্মীকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

মনে রাখতে হবে, সাধারণ সতর্কতা, পরিকল্পনা ও তৎপরতাই প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ, কর্মী এবং পুরো প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষিত রাখতে পারে।