বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে চায়ের দাম নেননি বকুল
দোকানের সামনে একটি পোস্টার সাঁটানো। তাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা আছে, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সকলের জন্য চা ফ্রি।’
বকুল দাসের (৪০) দোকান এটি। তিনি একজন চা বিক্রেতা। তাঁর এ আয় দিয়েই টেনেটুনে সংসার চলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত তিনি। তাই নেতার (বঙ্গবন্ধু) জন্মদিন উপলক্ষে ভালো কিছু করার ইচ্ছা ছিল তাঁর। সে ইচ্ছা থেকেই আজ মঙ্গলবার তাঁর দোকানে যে এসেছে, তাকেই বিনা পয়সায় চা পান করিয়েছেন।
বকুলের বাড়ি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামে। তাঁর দোকানটি উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জ বাজার এলাকায়।
বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দেখা যায়, বকুলের দোকানের আশপাশে ৪০ থেকে ৫০ জন লোক দাঁড়ানো। কারও কারও হাতে চায়ের কাপ। কয়েকজন টাকা দিতে চাইলেও বকুল তাঁদের ফিরিয়ে দেন।
চা পান করে ফেরার পথে স্থানীয় ব্যবসায়ী দিলীপ চৌধুরী বললেন, ‘বকুলের দোকানে প্রায়ই চা খাই। আজ টাকা নিতে চাইল না। বলল, আজকের জন্য ফ্রি।’
উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা কয়ছর আহমদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতি চায়ের দোকানির ভালোবাসা, সত্যিই সবাইকে মুগ্ধ করেছে। তাঁর (বকুল) জন্য শুভকামনা থাকল।’
আজ চা পান করাতে গিয়ে বকুলের দম ফেলার যেন ফুরসত নেই। একের পর এক চা তৈরি করে দিচ্ছেন। তাঁকে সহযোগিতা করছেন ছোট ভাই বলাই দাস।
কাজের ফাঁকে বকুল বললেন, ‘বঙ্গবন্ধু তো এই দেশটারে স্বাধীন করছেন। তাঁর জন্য দেশটা পাইছি। আজ মানুষটার ১০০তম জন্মবার্ষিকী। এই কারণে এই দিনে এক দিনের জন্য সবাইকে ফ্রিতে চা খাওয়াচ্ছি। কারও কাছ থেকে টাকা নিচ্ছি না। প্রতিদিনই তো চা বেচে টাকা নিই। এক দিন রোজগার না হলে কোনো সমস্যা হবে না।’
কলেজছাত্র তাপস দাস বলেন, ‘বকুল দাদাকে ছোটবেলা থেকে এখানে চা বিক্রি করতে দেখছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর টানেই তাঁর এই আয়োজন।’