গাজীপুরে কলেজশিক্ষক নিখোঁজ, অভিযোগ অপহরণের

মোতাহার হোসেন
মোতাহার হোসেন

সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে সরকারি কলেজের এক শিক্ষককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর ৪৪ ঘণ্টা পার হলেও তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গত রোববার রাতে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চুপাইর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

নিখোঁজ শিক্ষকের নাম মোতাহার হোসেন (৩৫)। তিনি ৩৩তম বিসিএস ক্যাডার এবং নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক। তিনি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চুপাইর গ্রামের হাফিজ উদ্দিন মোড়লের ছেলে।

কলেজশিক্ষকের পরিবার সূত্র জানায়, রোববার রাত একটার দিকে ছয়-সাতজন লোক সাদাপোশাকে মোতাহার হোসেনের বাড়িতে যায়। তারা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেন। তাঁরা নিখোঁজ মোতাহারের বড় ভাই মো. মহসিন কবিরকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। পরে তাঁর কাছে জানতে চান, করিম কোথায় আছেন? মহসিন কবির তাঁদের বলেন, করিম কে? তিনি চেনেন না। পরে তাঁরা জানতে চান, ‘আপনার ভাই মোতাহার কোথায় আছে?’ তখন মহসিন কবির বলেন, মোতাহার বক্তা হিসেবে কাপাইশ এলাকার এক ওয়াজ মাহফিলে গেছেন। এরপর তাঁরা দ্রুত বাড়ি থেকে চলে যান।

মহসিন কবির তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর ভাইয়ের মুঠোফোনে কল দিয়ে তাঁর অবস্থান জানতে চাইলে মোতাহার হোসেন জানান, তিনি বাড়ির কাছাকাছি (এক কিলোমিটারের মধ্যে) ফকিরেরবাগ টেকে (রাস্তায়) আছেন। পরে তাঁর বাড়ি আসতে দেরি দেখে পুনরায় তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও আর পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে তাঁর খোঁজ করা হয়, কিন্তু কোনো হদিস মেলেনি। তবে রাত দুইটার দিকে মোতাহার নিজেই ফোন দিয়ে দোয়া করতে বলেন।

মো. মহসিন কবির আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোববার রাত আনুমানিক দুইটার দিকে আমার ভাই ফোন করে বলেন, “ভাই, মা কোথায়? তাঁকে আমার জন্য দোয়া করতে বলবেন। আমাকে এই লোকেরা টঙ্গীর দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।” বলার সঙ্গে সঙ্গেই অজ্ঞাত লোকেরা বলেন, “আপনি কে?” আমি মোতাহারের বড় ভাই বললে, তাঁরা বলেন, কালকের (সোমবার) আগে কল করে আর যেন ডিস্টার্ব না করি। আমি তাঁদের পরিচয় জানতে চাইলে তাঁরা কল কেটে দেন। এরপর থেকে মুঠোফোনটি আর খোলা পাওয়া যায়নি। সেদিন থেকে মোতাহার নিখোঁজ।’

এ ঘটনায় মহসিন কবির গতকাল সোমবার গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুল হক জানান, মোতাহার হোসেনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।