কোয়ারেন্টিনের শর্ত মানছেন না, হতে পারে জেল-জরিমানা

কোয়ারেন্টিনের শর্ত মানছেন না। ইচ্ছেমতো ঘুরছেন–ফিরছেন? বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে জেল–জরিমানা হয়ে যেতে পারে। আসুন দেখে নিই, আইন কী বলে।

বাংলাদেশে সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ২৬৯, ২৭০ ও ২৭১ ধারায়ও এ সম্পর্কে উল্লেখ আছে।

দুই বছর আগে প্রণীত এই আইনে কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে বলা আছে। আইনের ১৪ ধারা অনুযায়ী, ‘যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোনো সংক্রমিত ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন করা না হইলে তাহার মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত হইতে পারেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সাময়িকভাবে অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তর বা জনবিচ্ছিন্ন করা যাইবে।’

আইনের ২৪ ধারায় রোগের বিস্তার ঘটানো এবং তথ্য গোপন করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনের ২৪–এর ২ ধারা অনুযায়ী এ অপরাধের শাস্তি কমপক্ষে ছয় মাস কারাদণ্ড, অনূর্ধ্ব ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড। ক্ষেত্রবিশেষে দুটি দণ্ডই প্রয়োগ করা হতে পারে।

কেউ যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাজে বাধা প্রদান দেন বা নির্দেশ পালনে অসম্মতি জানান, তাহলে এই আইনের ২৫–এর ২ ধারা অনুয়ায়ী অনূর্ধ্ব তিন মাসের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

আইনের ২৬–এর ২ ধারা অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদান করেন, তাহলে তাঁর অনূর্ধ্ব দুই মাসের কারাদণ্ড বা অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আইনে ২৩টি রোগকে সংক্রামক রোগ হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে এর বাইরে নতুন যেকোনো সংক্রামক রোগই এই আইনের আওতাভুক্ত হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ধারা ৪–এ যে রোগগুলোর কথা বলা হয়েছে, সেগুলো হলো ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়াসিস, ডেঙ্গু, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এভিয়ান ফ্লু, নিপাহ, অ্যানথ্রাক্স, মারস-করোনা, জলাতঙ্ক, জাপানিস এনকেফালাইটিস, ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, শ্বাসনালির সংক্রমণ, এইচআইভি, ভাইরাল হেপাটাইটিস, টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগসমূহ, টাইফয়েড, খাদ্যে বিষক্রিয়া, মেনিনজাইটিস, ইবোলা, জিকা, চিকুনগুনিয়া এবং সরকারি গেজেট অনুযায়ী যেকোনো রোগ।

সিটি করপোরেশন দায় এড়াতে পারে না
সিটি করপোরেশন আইনে নগরে সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার দায়িত্ব করপোরেশনের। বরিশাল সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী, করপোরেশন সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সার জন্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে এবং সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করবে।