শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন শুকলা

মাদকাসক্ত স্বামী। তাঁর মাদকসেবনে বাধা দেওয়ায় প্রায়ই মারধরের শিকার হতে হতো স্ত্রীকে। বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার চাপও ছিল। দরিদ্র বাবার পরিবার। টাকা দেবেন কীভাবে? এ অবস্থায় প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে আত্মহত্যার পথই বেছে নিলেন শুকলা (২০)।

শুকলার বড় তিন বোন মনোয়ারা, সাবানা ও পুতুল থানা চত্বরে এভাবে বোনের আত্মহত্যার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করছিলেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বিষপানে আত্মহত্যা করেন শুকলা। তিনি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের মহিষাপাড়া গ্রামের দিদার মোল্লার স্ত্রী।

শুকলার তিন বোনের ভাষ্য, দুপুরের পর শুকলা তাঁর স্বামীর বাড়িতে বিষপান করেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তাঁকে হাসপাতালে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যান।


হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বিকেল পাঁচটার দিকে শ্বশুরবাড়ির একজন পুরুষ ও দুজন নারী শুকলাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তাঁদের আর দেখা যায়নি। শুকলা প্রচুর পরিমাণে বিষপান করেন। চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতালে আনার আধা ঘণ্টা পরে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।


শুকলা ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখপুর গ্রামের ছোরাপ বিশ্বাসের মেয়ে। আট বছর আগে দিদারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের পাঁচ বছর বয়সী দুটি যমজ মেয়ে রয়েছে। উভয়ই দরিদ্র পরিবার।


শুকলার পরিবারের সদস্যরা জানান, শুকলাকে বাবার বাড়িতে যেতে দিতেন না তাঁর স্বামী। এমনকি মা–বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও মারধরের শিকার হতে হতো। এক-দেড় বছর ধরে নির্যাতন বেড়ে গিয়েছিল।


লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়েছে। লাশ থানায় রয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। এর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।