মাদারীপুরে ৩টি থানকুনিপাতার দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাদারীপুরে ‘থানকুনিপাতা’ খাওয়ার গুজব ছড়ানো হয়েছে। এমনকি কাঁচামালের বাজারগুলোতেও ৩টি থানকুনিপাতা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে। তবে এর কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

স্থানীয় লোকজন থেকে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় মসজিদে মাইকিং করে থানকুনিপাতা খাওয়ার গুজব ছড়ানো হয়। এমন গুজবে জেলার প্রায় প্রতিটি স্থানে থানকুনিপাতা খাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়।

বুধবার ভোর থেকে অনেকেই তিনটি করে থানকুনিপাতা খাচ্ছেন। অনেকে থানকুনিপাতা খাওয়ার উপকার আছে জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। কেউ কেউ থানকুনিপাতার ছবি তুলে ফেসবুকেও দিয়েছেন। আবার অনেকেই থানকুনিপাতা নিয়ে ফেসবুকে ট্রল করেছেন। চারদিকে থানকুনিপাতার খবর ছড়িয়ে পড়ায় কাঁচামালের বাজারের দোকানিরা থানকুনিপাতা বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। বাজারে তিনটি পাতা ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

চরমুগুরিয়া এলাকার বাসিন্দা দীপা রানী বলেন, তাঁর বাড়ির পাশে বাগানে অনেকগুলো থানকুনিপাতার গাছ ছিল। সকালে উঠে দেখেন ওই গাছে একটি পাতাও নেই। অনেকে গাছ উপড়ে নিয়ে গেছে।

খাগদী এলাকায় চাকরিজীবী মনির হোসেন বলেন, ‘সকালে মা ফোন করে বলে খালি পেটে থানকুনিপাতা খেতে। মায়ের নির্দেশে ১০টাকা দিয়ে তিনটি থানকুনিপাতা কিনে খাই।’

শাহাদাত হোসেন নামে একজন ফেসবুকে তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘লবণ আর পেঁয়াজের দিন শেষ, এখন থানকুনিপাতার বাংলাদেশ। করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে বেশি বেশি থানকুনিপাতা খান।’

মাদারীপুর সদরের ঘটমাঝি এলাকার একটি মসজিদের ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, একজন পীরের কাছ থেকে তাঁরা জেনেছেন যে থানকুনিপাতায় করোনার প্রতিষেধক রয়েছে। তাই তাঁরা সবাইকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এটা কোনো ভুল নয়। এমনিতেই থানকুনিপাতা শরীরের জন্য অনেক ভালো। সবার এটা খাওয়া উচিত।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা অখিল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে থানকুনিপাতা খাওয়ার বিষয় আমিও শুনেছি। চিকিৎসাবিজ্ঞানে থানকুনিপাতা ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ হলেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সঙ্গে থানকুনিপাতা খাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি সম্পূর্ণ একটি গুজবমাত্র। সকলের উচিত, এমন গুজবে কান না দিয়ে সচেতন হওয়া।’