ফরিদপুরে বিদেশফেরত ৪ হাজার ব্যক্তি কোথায়

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ফরিদপুরে বিদেশফেরত ৩ হাজার ৯৯৩ জনকে খুঁজছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এই ব্যক্তিরা হোম কোয়ারেন্টিনে (বাড়িতে পৃথকবাস) থাকার কথা, কিন্তু তাঁরা সে নির্দেশনা মানছেন না। এখন তাঁদের খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

১ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ফরিদপুরে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩ হাজার ৯৯৩ জন ফরিদপুরে এসেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ভারতফেরত। অভিবাসন পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে এই তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার তাঁর সম্মেলনকক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান। তিনি আতঙ্ক না ছড়িয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমান, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক এ এস এস আলী আহসান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্তিক চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

জানতে চাইলে গতকাল বুধবার সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ফরিদপুরে এখন পর্যন্ত ২২ জন বিদেশফেরত ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন ইতিমধ্যে সংক্রমণের ঝুঁকির সময় পার হওয়ায় মুক্তভাবে চলাফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের লক্ষণ রয়েছে, এমন রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি ওয়ার্ড খোলা হয়। এই ওয়ার্ডে পাঁচটি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ১০ জন রোগীর চিকিৎসা করার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এ হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রস্তুত রাখা হয়েছে চারটি শয্যা। সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন ইউনিটের সুবিধা না থাকলেও পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে ১৭টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট রয়েছে, এমন কোনো রোগীকে ভর্তি করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে এসব উপসর্গ নিয়ে এক রোগী এলেও ভর্তি করা হয়নি। হাসপাতাল থেকে তাঁকে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে তাঁকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা-সংক্রান্ত ওয়ার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন স্টাফ নার্স ভারতী রানী সাহা। তিনি দাবি করেন, ‘গত ২৫ জানুয়ারি এ ওয়ার্ড খোলার পর থেকে এ পর্যন্ত কেউ ভর্তি হতে আসেননি। শুনেছিলাম, একজন রোগী ভর্তি হবেন। শুনেছি, তিনি ঢাকায় চলে গেছেন।’

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানও অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এ জাতীয় রোগী এলে তাঁদের ভর্তি তো না করার কথা নয়।’