করোনা শনাক্তে কিট তৈরির কাঁচামাল আনার অনুমতি পেয়েছে গণস্বাস্থ্য

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ফাইল ছবি
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস শনাক্তে কোভিড-১৯ রোগ পরীক্ষার সহজ ও স্বল্পমূল্যের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র। তারা এ কিট তৈরির কাঁচামালের আমদানির অনুমতি পেয়েছে। গতকাল বুধবার গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে কিট ব্যবহার করতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল বা রিএজেন্ট আমদানির অনুমতি চেয়েছিল।

গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাঁচামাল আমদানির অনুমতি পেয়েছি। কিন্তু তাতেও সমস্যার শেষ হবে না। ট্যাক্সের বিষয় আছে। এখন কাঁচামাল যদি এসে বিমানবন্দরে পড়ে থাকে এবং ট্যাক্স নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় তাতে জিনিস নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। সরকারকে এখনই এটা শুল্কমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ছাড়া কাঁচামাল এলেই যেন সেগুলো দ্রুত খালাস করতে পারি সে নির্দেশনা দরকার।’

তিনি আরও জানান, কিট দিয়ে তাঁরা নমুনা তৈরি করে তা সরকারকে দেবেন। তখন সরকার সেটা পরীক্ষা করে দেখবে সেটা কতটুকু কাজ করে। তিনি জানান, তাদের কাজ সম্পর্কে জেনে আমেরিকান ডিজিজ কন্ট্রোল গণস্বাস্থ্যের সঙ্গে ওই করোনা শনাক্তের কিট তৈরিতে কাজ করতে চায়।

বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের চার চিকিৎসক নিহাদ আদনান, মোহাম্মদ রাশেদ জমিরউদ্দিন ও ফিরোজ আহমেদ এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। ২০০৩ সালে পৃথিবীজুড়ে সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুর গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। বিজন কুমার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী।

গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্লাড গ্রুপ যে পদ্ধতিতে চিহ্নিত করা হয়, এটা মোটামুটি সে রকমের একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা যাবে। এটা করতে রিএজেন্ট লাগে। কেমিক্যাল রিএজেন্টগুলো সহজলভ্য নয়। এগুলো পাওয়া যায় সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে।

বিজন কুমার ও তাঁর দলের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ৩৫০ টাকায় ১৫ মিনিটে করোনা শনাক্ত সম্ভব জানিয়ে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, ‘গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে মাত্র ৫ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে করোনা শনাক্ত করা যাবে। এতে খরচ পড়বে তিন শ থেকে সাড়ে তিন শ টাকা। সরকার যদি এর ওপর ট্যাক্স-ভ্যাট আরোপ না করে, তাহলে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র দুই থেকে আড়াই শ টাকায় এটি বাজারজাত করতে পারবে বলে দাবি করেছে।