গুচ্ছ পরীক্ষায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত জগন্নাথের

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আয়োজনে অনুষ্ঠেয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণের ব্যাপারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

একাডেমিক কাউন্সিলের একাধিক সদস্য সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন শিক্ষক এই পদ্ধতিতে না যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, যেহেতু সব বিশ্ববিদ্যালয় এই পদ্ধতিতে আসছে না, সেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিলে মানের দিক থেকে নিচে নেমে আসতে পারে। গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির ব্যাপারে সারা দেশে কোনো শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের ব্যানারে আন্দোলন হয়নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরাও যেহেতু গুচ্ছ প্রক্রিয়ার সঙ্গে একমত নন, তাই শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ঠিক হবে না।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুরে আলম বলেন, ‘৯ মার্চ আমাদের এক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ওই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছিল। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় লকডাউন, তাই এ বিষয়ে আমরা পরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলন আয়োজন কমিটির সাবেক আহ্বায়ক আশরাফুল আলম বলেন, ‘দেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো না এলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন গুচ্ছ পদ্ধতিতে যাবে? ক্যাম্পাস খুললেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আমরা একদফা আন্দোলনে যাব।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান বলেন, ‘আমরা সব সময় চাইতাম, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমুক। কিন্তু দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হবে যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন শ্রেণির। এটা কাম্য নয়।’

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু বকর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিসহ অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অবস্থান গুচ্ছ পরীক্ষার বিপক্ষে। তারপরও কেন এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা খুবই রহস্যজনক। সত্যি খুবই হতাশাজনক। এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সার্বিক দিক বিবেচনায় জাতীয় স্বার্থেই আমরা এই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছি। আমি নিশ্চিত, আগামী বছর সব বিশ্ববিদ্যালয় এই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে।’